নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মাকে পাঁচ টুকরো করে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ছেলেসহ সাত আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করা হয়।
২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বুধবার বিকালে উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের নূরজাহান বেগম (৫৮) এর খন্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলো- ওই ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের আবদুল বারেক, নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির (৩২), একই গ্রামের মিলন মাঝির ছেলে নিরব (২৬), নূর আলমের ছেলে কসাই নূর ইসলাম (৩২), দুলাল মাঝির ছেলে কালাম ওরফে মামুন (২৮), মমিন উল্যার ছেলে মো. ইসমাইল (৩৫), হারুনের ছেলে মিলাদ হোসেন সুমন (২৮) এবং মারফত উল্যার ছেলে হামিদ (৩৫)।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিলুফার সুলতানা এ রায় দেন।
সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ হত্যার ঘটনায় প্রথমে নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় একটি মামলা করে। মামলার সূত্র ধরে পুলিশী তদন্তে হত্যার সঙ্গে সন্তানের সরাসরি জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। একইসঙ্গে তার ৬ সহযোগী মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে বলে প্রমাণ পায় পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, রায় ঘোষণার সময় আদালতে ৭ আসামি উপস্থিত ছিলেন। এই মামলায় ২৭ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়েছে। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। একইসঙ্গে আটক নিহতের ছেলের বন্ধু নিরব ও নূর ইসলামের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো চাপাতি, বালিশ, কোদাল ও নিহতের ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৭ অক্টোবর বুধবার বিকালে উপজেলার চর জব্বর ইউনিয়নের জাহাজমারা গ্রামের একটি বিল থেকে নূরজাহানের পাঁচটি খন্ডিত অংশের একটি অংশ উদ্ধার করে। পরে, পুলিশ নিহতের শরীরের আরও চারটি খন্ডিত অংশ উদ্ধার করে।
এর আগে, জমি বিরোধ নিয়ে বাকবিতণ্ডার পর ৬ অক্টোবর রাতে খাওয়ার পর নিজ কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন নূরজাহান। রাত ৯টা থেকে ১২টার মধ্যে কোন এক সময় হুমায়ুন কবির তার ৬ সহযোগীকে নিয়ে ঘুমন্ত নূরজাহানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, নিহতের লাশকে পাশ্ববর্তী একটি ধানখেতে নিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা আলাদাসহ পাঁচ টুকরা করে খন্ডিত অংশ ধানখেত ও বিলের মধ্যে ফেলে দেয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে চর জব্বর থানায় মামলা করে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে হুমায়ুন কবিরকে আটক করে। পরে, জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খুন হয়েছে প্রমাণ হয় এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই তার ছয় সহযোগীকে আটক করে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
কার দিকে, কেন তেড়ে গিয়েছিলেন তামিম
জামায়াতে আমিরের সঙ্গে একান্ত বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার
চট্টগ্রাম আদালতের গায়েব হওয়া ১৯১১ নথির খোঁজ মেলেনি