নিখোঁজ হওয়ার ১৭ দিন পর অবশেষে রাজধানী ঢাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মাগুরার এক কিশোরীকে। এ ঘটনায় দুই নারীসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রবিবার মাগুরা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও সদর থানার যৌথ অভিযানে অপহৃত কিশোরী উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান।
ওসি জানান, গত ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ১৬ বছর বয়সী ওই কিশোরী মোবাইল ফোন মেরামতের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর রাত হয়ে গেলেও সে বাড়িতে ফিরে না যাওয়ায় তার পরিবার মাগুরা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনাটি ক্লুলেস হওয়ায় বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনা করে মাগুরা জেলার পুলিশ সুপার মশিউদ্দৌলা রেজা মেয়েটিকে উদ্ধার এবং ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য মাগুরা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলকে দায়িত্ব দেন। সেল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ভুক্তভোগী ও আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে মাগুরা সদর থানা পুলিশকে সাথে নিয়ে শনিবার (৪ এপ্রিল) ভোর পৌনে ৫টার দিকে ঢাকার ডেমরা এবং যাত্রাবাড়ি থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে।
‘অভিযানের এক পর্যায়ে দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির একটি বাড়ির পঞ্চম তলার বাসা থেকে মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়। সেইসঙ্গে তাকে ঢাকায় আসতে উদ্বুদ্ধ করা এক নারীকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়।’
ভুক্তভোগীকে অপহরণের প্রক্রিয়া বর্ণনা করতে গিয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘৭ মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে পরিচয় হয় মেয়েটির। সেই সুত্র ধরে ধরে আসামি ভুক্তভোগীকে মাদকাসক্ত ও সমকামিতা করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখাতে থাকেন। এক পর্যায়ে গত ১৭ এপ্রিল আসামি ঢাকা থেকে মাগুরা এসে ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন প্রকার প্রলোভন দেখিয়ে এবং ভুল বুঝিয়ে কৌশলে মাগুরা বাস টার্মিনালে নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে যাত্রীবাহী বাসযোগে ঢাকায় নিয়ে প্রথমে ডেমরা থানা এলাকায় এক দম্পতির ভাড়া বাসায় রাখেন।’
তিনি বলেন, ‘এরপর সপ্তাহখানেক আগে আসামিরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে যাত্রাবাড়ি থানা এলাকায় নতুন বাসা ভাড়া করে ভুক্তভোগীকে সেখানে নিয়ে যান। পরবর্তীতে মাগুরা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ও সদর থানার যৌথ আভিযানিক দল তাদের যাত্রাবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার ও ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে।’
তদন্তের তথ্য দিয়ে ওসি জানান, তিন আসামির একজন মো. হারুন শেখ। তার নামে দেশের বিভিন্ন জেলায় ডাকাতি, ডাকাতি প্রস্তুতিসহ মোট ৯টি মামলা রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানায় তার বিরুদ্ধে ৬টি ওয়ারেন্ট মূলতবি রয়েছে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। পরে আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
জামায়াতে আমিরের সঙ্গে একান্ত বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার
চট্টগ্রাম আদালতের গায়েব হওয়া ১৯১১ নথির খোঁজ মেলেনি
‘এইচএমপিভি’, নতুন ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে যেভাবে