নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, দেশের মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেন। তারা যেন তাদের পছন্দমতো প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা করুন। তাহলে দেখবেন রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর এটা যদি মানতে না পারেন তাহলে বস্তা বেঁধে রাখা ভালো।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র ভোটাধিকার না আসলে অতীতের তাদের মতো হতে পারে। এই কথা বলতে আমাদের খারাপ লাগে কারণ বিএনপি, ছাত্রজনতা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এ কথাটা আপনাদের মাথায় রাখতে হবে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের উদ্যোগে নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে এক নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
দুদু বলেন, আমাদের আপসহীন নেত্রী, গণতন্ত্রের মাতা। গতকাল বাংলাদেশে এসেছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি তার সারাটা জীবন আন্দোলন করে বিলিয়ে দিয়েছেন। এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই তিনি সব বিপদ বরণ করে নিয়েছেন। ১৯৭১ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন স্বাধীনতার ঘোষণা করেন তখন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দি করে রেখেছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে তিনি মুক্তি পেয়েছেন।
তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পরে বেগম খালেদা জিয়া দীর্ঘ ৯ বছর স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ৯০ এর ছাত্র জনতা গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারকে পতন করেছে। কারণ ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের সিপাহসালার যারা ছিলেন তারা সবাই বেগম জিয়াকে নেত্রী হিসাবে মানতেন। শেখ হাসিনাকে না। সে সময় শেখ হাসিনা আপস করতে চেয়েছিলেন। এই রাগে তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি ছাত্রলীগ ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দেন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, সেই আপসহীন নেত্রী গতকাল বাংলাদেশে এসেছেন। তাকে বরণ করার জন্য বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত জনতার ঢল নেমেছিল। এই জনতার ঢল হচ্ছে গণতন্ত্রের মাতাকে বরণ করে নেওয়া। গণতন্ত্রকে বরণ করে নেওয়া। স্বাধীনতাকে বরণ করে নেওয়া। এটি বর্তমান সরকার বুঝতে পারলে দেশের সমস্যা দ্রুত সমাধান হবে।
তিনি বলেন, আইয়ুব খান স্বৈরাচারী পন্থায় ১০ বছর ক্ষমতায় ছিল কিন্তু এ দেশের ছাত্র জনতা তাকে পতন করে। পরে মুক্তিযুদ্ধ হয় এবং বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়। গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীনতার কারণে স্বৈরাচার এরশাদকে পতন করেছিল এদেশের ছাত্রজনতা। এদেশের ছাত্র ও জনগণ গণতন্ত্রের জন্য ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে এটা যদি এ সরকারের বুঝতে না পারে তাহলে খুবই দুঃখজনক।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি ও ছাত্রদলসহ তার অঙ্গসংগঠন ৫ হাজার নেতাকর্মী গুম হয়েছে, খুনের স্বীকার হয়েছে, নিখোঁজ হয়েছে। এটা যদি বর্তমান সরকার বুঝতে না পারে তাহলে তারা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল এটা বলা যাবে না।
বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, গণতন্ত্র না মানার কারণে আইয়ুব খান পালিয়েছে। মুজিবুর রহমানের ভয়ংকর পরিণত হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর গণতন্ত্র হরণ ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য শেখ হাসিনাও পালাতে বাধ্য হয়েছে। তাই গণতন্ত্র মেনে নেন। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আরিফা সুলতানা রুমাসহ সংগঠনটি বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন
দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানালেন তারেক রহমান
পাক-ভারত উত্তেজনায় অনিশ্চিত বাংলাদেশের দুই গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ