August 14, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 10th, 2025, 4:29 pm

মায়ের অসুস্থতার প্রমাণ মেলেনি, পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে না সেই আনিসার

সময়মতো কেন্দ্রে না আসায় এইচএসসির প্রথমদিনে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষা দিতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন আনিসা আহমেদ। কাঁদতে কাঁদতে সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন, অসুস্থ মাকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটতে হয়েছিল তাকে। সেজন্য কেন্দ্রে আসতে দেরি হয়েছে। আর দেরির কারণে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেননি তিনি।

সরকারি বাঙলা কলেজ কেন্দ্রের সামনে আনিসার ছোটাছুটি ও কান্নার সেই ছবি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান নেটিজেনরা। তাকে বাংলা প্রথমপত্র পরীক্ষার সুযোগ দেওয়ার দাবি উঠে। সেই দাবি মেনে আনিসাকে পরীক্ষায় বসানো হবে বলে ঘোষণাও দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা বোর্ড।

তবে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হতে একই সঙ্গে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। একটি কমিটি করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড এবং আরেকটি কমিটি করা হয় আনিসার পরীক্ষা কেন্দ্র সরকারি বাঙলা কলেজের পক্ষ থেকে। দুই পক্ষের তদন্তে ঘটনা সম্পর্কে আনিসার বর্ণনা অনুযায়ী সত্যতা মেলেনি। সেজন্য আনিসাকে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না। তবে আনিসা যদি বাংলা দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষায় ৬৬ নম্বর পায়, তাহলে দুই পত্র মিলিয়ে তাকে পাস করিয়ে দেওয়া হবে।

রোববার (১০ আগস্ট) ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম কামাল উদ্দিন হায়দার সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিসার পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। তার দেওয়া তথ্যগুলো যাচাইয়ের কাজ করা হয়েছে। সেগুলো বিবেচনা করা হচ্ছে। সে পরীক্ষা না দিয়েও পাস করতে পারে। সেক্ষেত্রে তাকে দুই পত্র (বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র) মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেতে হবে। তাহলে তার রেজাল্ট আসবে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক উপসচিব ও ঢাকা বোর্ডের দুই কর্মকর্তা জানান, মায়ের অসুস্থতা নিয়ে আনিসা যেভাবে তথ্যগুলো দিয়েছিল, তার সত্যতা মেলেনি। তার মা ওই হাসপাতালের নিয়মিত রোগী। সেদিন সকালে যে হঠাৎ সেখানে ভর্তি হয়েছিল হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছিল; এমন তথ্যেরও সত্যতা মেলেনি। এমনকি হাসপাতালে ভর্তির যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আনিসা আমাদের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করেনি। ঢাকা বোর্ড ও বাঙলা কলেজ যে তদন্ত কমিটি করেছিল, তারা আমাদের কাছে হাসপাতালে ভর্তির স্লিপসহ কিছু তথ্য-উপাত্ত চেয়েছিল। আমরা সেগুলো আনিসার কাছ থেকে নিয়ে কমিটিকে দিয়েছিলাম। এখন শিক্ষার্থী যদি ভুয়া স্লিপ এনে দেয়, তাহলেও তো আমাদের কিছু করার নেই। সেটার সত্যতা তদন্ত কমিটি যাচাই করেছে। যতদূর জেনেছি, ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় বোর্ড তার আর পরীক্ষা নিচ্ছে না। এখন যে উপায়টা আছে, তা হলো দুই পত্র মিলিয়ে ৬৬ নম্বর পেলে পাস ধরা হয়। সেক্ষেত্রে বাংলা দ্বিতীয়পত্রে আনিসা ৬৬ পেলে এবং বাকি সব বিষয়ে পাস করলে; সে পাস করে যাবে।’