জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
মিষ্টি আলু চাষ করে সফলতার মুখ দেখছেন দক্ষিণ সুরমার কৃষক সৈয়দুর রহমান। এবছর দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় তিনি দ্বিতীয় বারের মত ১৫ শতক জমিতে বারি ৫টি জাতের মিষ্টি আলুর আবাদ করেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ সুরমার কৃষক সৈয়দুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ কৃষি কাজের সাথে জড়িত। তিনি প্রতিবছরই কোন না কোন জাতের আধুনিক ফসল চাষে এগিয়ে আসেন। গত বছর তিনি বারি বেগুন-১২ চাষ করে গোটা এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিলেন। লাউয়ের মত দেখতে বড় আকারের এ বেগুন চাষ করে তিনি সফল হয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছর তিনি বারি মিষ্টি আলু চাষ করেও সাড়া ফেলেছেন।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোল্লারগাঁও ইউনিয়নের মন্দিরখলা গ্রামের কৃষক সৈয়দুর রহমান বলেন, কৃষি অফিস থেকে দ্বিতীয় বারের মত লতি ও সার পেয়ে ১৫ শতক জমিতে বারি মিষ্টি আলু বারি-১২, বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৬ ও বারি-১৭ জাতের চাষ করি। গত বছর আশানুরূপ ফসল পেয়ে এবছর একটু বেশি জমিতে মিষ্টি আলু চাষ করি। এ পর্যন্ত চাষ বাবদ প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ৫০ হাজার টাকার অধিক দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উৎপাদন খরচ কম ও ভালো মূল্য পাওয়ায় আগামীতে অনেক কৃষক এটির চাষ করবে। সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগিতায় তিনি অল্প পুঁজি বিনিয়োগ করেই লাভের মুখ দেখছেন বলে জানান।
তিনি জানান গত কয়েক বছর ধরে বাজারে মিষ্টি আলুর চাহিদা বেড়েছে। ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী বাজারে মিষ্টি আলুর দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। মিষ্টি আলু চাষাবাদে তেমন একটা সার প্রয়োগ করতে হয় না বলে খরচ কম। এ ফসলে তেমন কোনো রোগ বালাইও দেখা যায় না। তাই এই আবাদে অল্প পুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভ পাওয়া যায়। যে কারণে মিষ্টি আলু চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন এই উপজেলার কৃষকরা।উচ্চ ফলনশীল, ঝুঁকি ও রোগ পোকামাকড় কম, অল্প খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়।
দক্ষিণ সুরমা উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ রাজিব হোসেন বলেন, এটি স্বল্প জীবন কালীন এবং অত্যন্ত পুষ্টি সমৃদ্ধ উচ্চ মূল্যের একটি সবজি। ডুমুরিয়ার আবহাওয়া এবং মাটি এটি চাষের জন্য উপযোগী এবং এ ফসলে ঝুঁকিও কম। এটি মাটিকে ঢেকে রাখে বলে মাটিতে অনেক দিন রস থাকে, আগাছা কম হয় এবং এর পাতা পচে উৎকৃষ্ট সার হয়। তিনি আরও বলেন, এটি সম্প্রসারণের জন্য আমরা কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষককে নিয়মিত প্রশিক্ষণ এবং প্রদর্শনী সহায়তা দিচ্ছি এবং এটি সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছি। আগামীতে এর আবাদ ও এলাকা বৃদ্ধি পাবে।
সরেজমিন গবেষণা বিভাগ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট, সিলেটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক ড. মাহমুদুল ইসলাম নজরুল বলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট এ বছরই জাতটা আবিষ্কার করেছে। স্থানীয়ভাবে কৃষকদের মাঝে এর বীজ বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় মিষ্টি আলু চাষ হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণ সুরমার দ্বিতীয় বারের মতো বারি মিষ্টি আলু চাষ করা হয়েছে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন জাতগুলো এ অঞ্চলে ব্যাপক আকারে চাষের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অনেক কৃষকই মিষ্টি আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ দেশের ওলামাদের নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছে —রংপুরে শামসুজ্জামান দুদ
রংপুরে এক্্র ক্যাডেটস্্ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
কোম্পানীগঞ্জে অস্ত্রসহ ব্যবসায়ীকে আটক করলো সেনাবাহীনী