রংপুর ব্যুরো :
মহান মুক্তিযুদ্ধে নিজে অপারেশন না করেই অন্যের অপারেশন নিজ নামে চালিয়ে রংপুর জেলা প্রশাসন কর্তৃক স্মৃতিতে রণাঙ্গণ বইয়ে প্রকাশিত লেখার প্রতিবাদ এবং সংশ্লিষ্ট লেখকের মুখোশ উন্মোচন করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ রংপুর জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক জেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুরুল ইসলাম (জুনিয়র লিডার).বডি নং ১/২৩ ভারতীয় তালিকা নং ৩০০৮১ গেজেট নং ৭৩ কোতয়ালী রংপুর।
গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় স্থানীয় এক হোটেল মিলনায়তনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন রংপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের কমান্ডার হিসেবে আমি দীর্ঘ ২২ বছর সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধে আমি ডেমো বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হওয়ায় মহান মুক্তিযুদ্ধে জুনিয়র লিডার হিসেবে দায়িত্বপালন করি এবং আমার নেতৃত্বে ৬ নম্বর সাব সেক্টরে প্রথম চিলাহাটি মির্জ্জাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের মধ্যকার ২০৮ নং ব্রীজটি ধ্বংস করার দায়িত্ব পড়ে। আমি সহ সহযোদ্ধা মতিউর রহমান চৌধুরী, খন্দকার গোলাম কিবরিয়া, মো: আব্দুল লতিফ, মো: শাহ আলম, মো: ইসমাইল হোসেন, মো: ইউনুস, নুরুল আমিন রহিম উদ্দিনসহ ১১ জনের একটি টিম নিয়ে সন্ধ্যার পর যাত্রা শুরু করি ৩০ পাউন্ড বিস্ফোরক দিয়ে রাত ৩টার দিকে ব্রীজটি ধ্বংস করি। বিগত দিনে রংপুর জেলা প্রশাসক হিসেবে মো: আসিব আহসান দায়িত্ব পালন কালে মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিতে রনাঙ্গন নামে মুক্তিযোদ্ধাদের লেখা নিয়ে একটি বই প্রকাশ করেন।
উক্ত বইটিতে নিজে কৃতিত্ব নিয়ে ব্রীজ ধ্বংসের কাহিনী বানিয়ে যে লেখাটি মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম গেজেট নম্বর ১৪০ পিতা মৃত. রফিজ উদ্দিন, মাতা মৃত. ছালেহা খটখটিয়া পূর্বপাড়া পরশুরাম ওয়ার্ড নম্বর ৫ মহানগর রংপুর নামে প্রকাশিত হয়েছে তা মিথ্যা। তিনি তার লেখায় নিজেকে ৬ নং সেক্টরের প্রথম কোম্পানীর ডেমোলিশন চার্জের একজন স্পেশাল প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা দাবি করেছেন। বাস্তবে তিনি মুক্তিযোদ্ধার সাধারণ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধা। তিনি বিশেষ কোন প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ছিলেন না। যা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাষ্টের ৩৮২১৫ ভারতীয় নম্বরে যাচাই করলে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে।
আমি দীর্ঘ দিন জেলা কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বপালন করার পরও সে সময় জেলা প্রশাসক আমাকে বিএনপি‘র সমর্থক তকমা লাগিয়ে প্রকাশনার কোন কমিটিতে আমাকে অন্তর্ভুক্ত করেন নি। বইটি প্রকাশের পর আমি সার্বিক চিত্র তুলে ধরে রংপুর জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগসহ আবেদন করি। সেময় তিনি ঘটনাটি দু:খজনক বলে অভিহিত করেন এবং দ্রুত এটি সংশোধন করা হবে বলে জানান। কিন্তু তা আর হয়নি। আওয়ামীলীগ শাসনামলে ডিসি আসিব আহসান সুযোগ সুবিধাসহ পদোন্নতি নিয়ে রংপুর ত্যাগ করেন। আর সেই লেখাকে পুজি করে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বিভিন্ন স্থানে ফায়দা নিচ্ছেন। শুধু তাই নয় মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম আমার সেকশন অধীনে মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও ওই অপারেশনে তিনি ছিলেন না। অথচ রংপুর জেলা প্রশাসকের প্রকাশনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক আওয়ামীলীগ সরকারের সুবিধাভোগী ডিসি বিষয়টি জেনে ইচ্ছাকৃতভাবে সিরাজুল ইসলামের নামে প্রকাশ করেছেন এবং আমি সহ আমার টিমের অর্জনটি ম্লান করে দিয়েছেন। যা কোন ভাবেই কাম্য ছিলোনা। ডিসি সাহেব প্রকাশিত বইটিতে একটি সংশোধনী দিতে পারতেন তা তিনি দেন নি। প্রকাশিত বইটিতে মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বলেছেন তিনি মুক্তিযুদ্ধে আহত হয়ে বিন্নাকুড়ি আর্মি হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১৬দিন চিকিৎসা গ্রহণ করেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা তিনি আহত হলে আমরা জানতে পারতাম । তিনি নিজেকে জাহির করার জন্য অপরের সকল অপারেশন নিজের নামে চালিয়ে বাহবা নিয়েছেন। যার দায়ভার এসে পড়ে তৎকালনি জেলা প্রশাসক আসীব আহসানের বিরুদ্ধে। সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উপদেষ্টার নিকট সুবিচার দাবি জানিয়েছেন।
এসময় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার মো: গোলাম কিবরিয়া, মুক্তিযোদ্ধা শামসুল, গোলাম রব্বানীসহ ৭/৮জন মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত থেকে কথা বলেন।
আরও পড়ুন
খুলনা বিএল কলেজে পরীক্ষার প্রশ্নে ‘ধানমন্ডি ৩২’ ও ‘শেখ মুজিব’, প্রতিবাদে ছাত্রদের মানববন্ধন
কালীগঞ্জ পৌরসভার উদ্যোগে সেলাই মেশিন ও গাছের চারা বিতরণ
উম্মুক্ত হলো পাইকগাছার নাছিরপুর খাল ; মাছ ধরার উৎসবে জনতার ঢল