আবুল কালাম আজাদ, মুরাদনগর(কুমিল্লা) প্রতিনিধি
মুরাদনগর উপজেলা বর্জ ব্যবস্থাপনায় অব্যবস্থাপনা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠছে। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নেই ময়লা আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান। ফলে উপজেলা গেইট সামনে জমে উঠছে আবর্জনা স্তুপ;যা অফিসে চেয়ারে বসে দুর্গন্ধ বসা যাচ্ছে না। এছাড়া পথচারী, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশ দুষণের পাশাপাশি বাড়ছে রোগবালাই, কিন্তু দীর্ঘদিনেও -এর কার্যকর সমাধান আসেনি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।উপজেলা পরিষদের খালে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমে এবং খালের অংশ দখল হয়ে যাওয়ায় পানি চলাচল পুরোপুরি অচল হয়ে পড়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই বসতঘর, চলাচলের রাস্তা ও বিদ্যালয় মাঠ তলিয়ে যায়।
সরজমিনে জানা গেছে, অন্যতম ব্যস্ততম কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলা সদর, পল্লী বিদ্যুৎ অফিস, সরকারি হাসপাতাল, পুলিশ স্টেশন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ফায়ারসার্ভিস অফিস, খাদ্যগুদাম অফিস, বিভিন্ন এনজিও অফিস, ইন্সুইরেন্স কোম্পানী অফিস, ঐতিহ্যবাহী কোম্পানীগঞ্জ বাজার টু মুরাদনগর উপজেলা সদর সড়ক দুই পাশে রামধনীমুড়া ও নিমাইকান্দি গ্রামের অন্তত ৫৬টি পরিবার ও রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন
উন্মুক্ত স্থানে আবর্জনা ফলা হয়। এতে দিনের অধিকাংশ সময় গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে। ময়লা পচে এবং আশপাশে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে খালের পূর্বাংশ দখল করে মাটি ভরাট করে রেখেছেন রামধনীমুড়া গ্রামের, মৃত জলিল মিয়ার ছেলে মোক্তল হোসেন (৫২) ও মৃত রোছমত আলীর ছেলে বুচ্চু মিয়া (৫৫)। এর সাথে খালে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনার স্তূপ পানি চলাচল একেবারে বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে বৃষ্টির পানি বের হতে না পেরে দুই গ্রামের বাড়িঘর ও বিদ্যালয় চত্বর প্লাবিত হয়ে যাচ্ছে।
গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ও রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে আছে। শিশু ও বৃদ্ধদের চলাচল চরমভাবে কষ্টসাধ্য হয়ে গেছে। হাসপাতালগুলোতেও বাড়ছে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। জমে থাকা স্থির পানি ও নোংরা পরিবেশে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি বেড়ে গেছে। এতে ডেঙ্গু রোগের ঝুঁকিও মারাত্মকভাবে বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। ইতিমধ্যেই কয়েকজন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, মুরাদনগর-কোম্পানিগঞ্জ পাকা সড়কের দক্ষিণে জেলা পরিষদের একটি খাল ছিল, যা দিয়ে উপজেলা পরিষদ, রহিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দুই গ্রামের পানি নিষ্কাশন হতো। কিন্তু ময়লার স্তূপের কারণে খালটির পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের দাবি, জরুরি ভিত্তিতে খাল থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে পানি চলাচল সচল করতে হবে। রামধনীমুড়া থেকে উপজেলা পরিষদ গেইট পর্যন্ত অন্তত ৫০ ফুটের দুইটি কালভার্ট নির্মাণ করলে দীর্ঘস্থায়ী সমাধান সম্ভব। সেই সাথে খালে ময়লা ফেলা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, এলাকাবাসীর একটি অভিযোগ পেয়েছি, জনভোগান্তি রোধের জন্য অতিদ্রুত ময়লা আবর্জনা অপসারণ করে, মুক্ত পানি চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
পরিকল্পিত ইস্যু তৈরি করে নির্বাচন বানচালের যড়যন্ত্র চলছে- প্রিন্স
খুলনা মহানগরী জামায়াতের প্রদিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে রংপুর মহানগর যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল