November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, November 17th, 2024, 4:47 pm

মৃত্যুর এক মাস পর মনি কিশোরের সেই ফ্ল্যাটের তালা খোলা হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:
গত অক্টোবরের ১৯ তারিখে রামপুরার একটি বাসায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় গায়ক মনি কিশোরকে। তার পর থেকে রুমটি তালাবদ্ধ। তদন্তের স্বার্থে রুমে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া অন্যদের প্রবেশ নিষেধ ছিল। অবশেষে সেই রুমটির তালা আজ রোববার খোলা হচ্ছে। এই তথ্য প্রথম আলোকে জানিয়েছেন মামলার দায়িত্বে থাকা রামপুরা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খান আবদুর রহমান।
আবদুর রহমান প্রথম আলোকে জানান, ‘বাড়ির মালিক ও মনি কিশোরের পরিবার থেকে বাড়িটি খালি করার কথা বলা হচ্ছিল। সবার সঙ্গে কথা বলেই বাড়িটি খালি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এতে আইনি কোনো বাধা নেই। কারও কোনো অভিযোগও নেই।’

এই দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘এক মাসের মতো হয়ে গেল। এর মধ্যে বাসার মালিক বলছিলেন রুমটি খালি করার কথা। তাঁরাও আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছিলেন। যে কারণে দুই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাঁদের উপস্থিতিতেই খালি করা হবে।’

৯৯৯–এ কল পেয়ে গত অক্টোবরের ১৯ তারিখ রাতে রুমটি থেকে মনি কিশোরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা যায়, কী কারণে রুমের ভেতর এই গায়কের মৃত্যু হতে পারে, সেই তদন্তের জন্য রুমটি তালাবদ্ধ ছিল। খান আবদুর রহমান বলেন, ‘আপাতত তদন্তের প্রয়োজনে রুমটি আর প্রয়োজন হচ্ছে না। গায়কের পরিবার ও বাসার মালিক চাইছেন রুমটি খালি করে দেওয়া হোক। সেই কারণেই আমরা খালি করার পক্ষে।’ এ সময় তিনি আরও জানান, কী কারণে মৃত্যু হয়েছে, সেই তদন্ত প্রতিবেদন এখনো হাতে পাননি। আরও কিছুদিন সময় লাগবে।

বাসার মালিক শামসুদ্দোহা তালুকদার বলেন, ‘যেহেতু বেশ আগেই মনি কিশোরের লাশ দাফন হয়েছে, আর কারও কোনো অভিযোগ নাই। এখন রুমটি খালি করে দিলে আমাদের জন্য ভালো হয়। এটা আমরা জানিয়েছিলাম পুলিশ ও মনি কিশোরের ভাইকে। পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, রুমটি খালি করা হবে। মনি কিশোরের ভাই আসার কথা রয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের লোকও থাকবেন। তাঁদের সামনেই সব বুঝিয়ে দেওয়া হবে।’

এর আগে বাসা থেকে মনি কিশোরের লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশের কর্মকর্তারা প্রাথমিক ধারণা করেছিলেন, অসুস্থতার কারণে মনি কিশোর মারা যেতে পারেন। তিনি নিয়মিত চিকিৎসা করাচ্ছিলেন বলেও পুলিশ ধারণা করেছিল। কারণ, লাশ উদ্ধারের পর বাসা থেকে সিটি স্ক্যান, এমআরআই রিপোর্টসহ কিছু মেডিকেল রিপোর্ট পাওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, মনি কিশোর পপি ভবনের বাসায় একাই থাকতেন। কয়েক দিন ধরে তাঁকে ফোনেও পাচ্ছিলেন না বাসার মালিক। এদিকে রুম ভেতর থেকে তালা দেওয়া ছিল। তাঁকে ডাকাডাকি করেও পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যদিকে রুমটি থেকে গন্ধও ছড়িয়ে পড়ে। তখন সবার ধারণা হয় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে। পরে ৯৯৯–এ পুলিশকে ফোন দেওয়া হলে তারা রুমের মধ্যে মৃত অবস্থায় পান মনি কিশোরকে। পরবর্তী সময় দাফন নিয়ে জটিলতা হয়। পরে গত ২৪ অক্টোবর ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীর বায়তুল জান্নাত জামে মসজিদের পাশেই একটি কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।

মনি কিশোর পাঁচ শতাধিক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। রেডিও-টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হলেও গান গেয়েছেন অল্প। সিনেমায়ও তেমন গাননি। মূলত অডিওতে চুটিয়ে কাজ করেছেন। তাঁর জনপ্রিয় গানের মধ্যে ‘কী ছিলে আমার’, ‘সেই দুটি চোখ কোথায় তোমার’, ‘তুমি শুধু আমারই জন্য’, ‘মুখে বলো ভালোবাসি’, ‘আমি মরে গেলে জানি তুমি’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তাঁর সবচেয়ে শ্রোতাপ্রিয় গান ‘কী ছিলে আমার’ তাঁরই সুর করা ও লেখা। মাঝে দীর্ঘদিন নতুন গান প্রকাশ থেকে দূরে ছিলেন এই গায়ক।