June 2, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, May 28th, 2025, 4:56 pm

মোংলা বন্দরে জাহাজ থেকে চুরি করা মালামালসহ তিনজন আটক

 

মোংলা প্রতিনিধিঃ

মোংলা বন্দরে অবস্থানরত একটি বাংলাদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে চুরি করা মালামালসহ তিন চোরাকারবারিকে আটক করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন।

এঘটনায় আরো যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কোস্টগার্ডের অভিযান চলমান রয়েছে।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মো. মাকরুজ্জামান ও উর্দ্ধতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অবঃ) মো. নজরুল ইসলামের উপস্থিতিতে ২৮ মে বুধবার দুপুরে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান সংবাদ সম্মেলনে বলেন,গত ২৬ মে রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টায় মোংলা পোর্ট সংলগ্ন বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙররত এমভি সেঁজুতি নামক বাংলাদেশি একটি জাহাজে প্রায় ১২ জন ডাকাত দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ প্রবেশ করে। তারা জাহাজের ক্রুদের জিম্মি করে এবং কিছু মেশিনারিজ মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়।

বাংলাদেশ কোস্টগার্ড উক্ত ঘটনার সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে একটি অনুসন্ধানী দল পাঠায় এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। এরপর কোস্টগার্ড জাহাজের নাবিকদের সাথে আলাপ করে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোংলা এলাকায় একাধিক অভিযান পরিচালনা করে। অতঃপর গত ২৭ মে ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং ডাকাতির সাথে সংশ্লিষ্ট ৩ জন ব্যক্তিকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত মালামাল এর মধ্যে রয়েছে ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরণের স্পেয়ার পার্টস, বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি এবং ব্যাটারি চার্জার ও অন্যান্য জাহাজের গুরূত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ।

প্রাথমিকভাবে এটি একটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও, জাহাজের কর্তৃপক্ষ, অফিসার, ক্রু ও আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিক বৃন্দ ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলেন বলে জানা যায়। জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন পায় না। এতে করে নাবিকদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। একারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্রুপ/ ডাকাতের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়।গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা জানায়, তারা জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে। দূর্ভাগ্যজনাক হলেও এতো বড় ঘটনা সম্পর্কে সহায়তা চেয়ে জাহাজের মালিক পক্ষ ক্যাপ্টেন সাহিকুল সাহেবকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ করা হলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। বর্তমানে উদ্ধারকৃত মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে এবং আটককৃত ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। তবে জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টি যথাযথ তদন্ত করার দাবি রাখে। জাহাজের মালিক কর্তৃক নাবিকদের বেতন ভাতা না দেয়া এবং গত ৬ মাস যাবৎ জাহাজটিকে এভাবে ফেলে রাখার বিষয়টিও আরো তদন্ত করার অবকাশ রয়েছে, সাজানো এই ডাকাতির ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদপত্রে বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রকাশ করার বিষয়টিও তদন্ত করা প্রয়োজন রয়েছে বলে প্রতীয়মান।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দেশের জলসীমায় নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জানমালের সুরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভবিষ্যতে এরূপ কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড তা কঠোরভাবে দমন করবে