অনলাইন ডেস্ক :
যুক্তরাজ্যের নতুন এই প্রধানমন্ত্রীর পুরো নাম মেরি এলিজাবেথ ট্রাস, তবে পরিচিতি লিজ ট্রাস নামে। জন্ম ১৯৭৫ সালে, ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডে। তার বাবা ছিলেন গণিতের অধ্যাপক এবং মা ছিলেন একজন নার্স। শুরুতে ট্রাসের পরিবার গ্লাসগোর পশ্চিমে পেসলিতে বসবাস করলেও পরে পরিবারটি লিডসে চলে যায়। লিডসের রাউন্ডহে স্কুলে শিক্ষাজীবনের শুরু ট্রাসের। মাত্র সাত বছর বয়সে স্কুলের এক সাজানো নির্বাচন আয়োজনে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার হয়েছিলেন ছোট্ট লিজ ট্রাস। সেই মেয়েই আজ প্রায় ৪০ বছর পর সত্যি সত্যি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে যাচ্ছেন তা কেই বা জানত। স্কুল শেষে ট্রাস অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়ার সুযোগ পান। সেখানে তিনি দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনা করেন। শিক্ষাজীবন চলাকালেই তিনি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। প্রথমে লিবারেল ডেমোক্র্যাটদের হয়ে কাজ করলেও পড়ে কনজারভেটিভ পার্টিতে যোগ দেন ট্রাস। ২০০০ সালে সহকর্মী হিউ ও’লিয়ারি-কে বিয়ে করেন ট্রাস। তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। ট্রাসের স্বামী, ও’লিয়ারিও রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৯৮,২০০২ এবং ২০০৬ সালে দক্ষিণ লন্ডনের গ্রিনিচের কাউন্সিলর নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে কোনও বারই সফল হননি। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে ট্রাস ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের হেমসওর্থ আসনে টোরি প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তবে হেরে যান। এরপর ২০০৫ সালে ওয়েস্ট ইয়র্কশায়ারের ক্যালডার ভ্যালি আসন থেকেও পরাজিত হন তিনি। ২০০৬ সালে লন্ডনের গ্রিনউইচ থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন ট্রাস। কনজারভেটিভ দলের সাবেক প্রধান ডেভিড ক্যামেরনের ট্রাসের ওপর আস্থা ছিল। তিনিই ট্রাসকে ২০১০ সালের নির্বাচনে অগ্রাধিকার পাওয়া প্রার্থীদের তালিকায় স্থান দেন। ফলস্বরুপ, সেবারের নির্বাচনে সাউথ ওয়েস্ট নরফোক আসন থেকে জয় পান তিনি। এমপি হওয়ার মাত্র দুই বছর পর ২০১২ সালে ট্রাস শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে সরাসরি সরকার পরিচালনায় আসেন। ২০১৪ সালে পরিবেশমন্ত্রী হন তিনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে’র মন্ত্রিসভায় বিচারমন্ত্রী ছিলেন ট্রাস। এরপর তিনি ট্রেজারি মন্ত্রী হন। ২০১৯ সালে বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথমে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেও ২০২১ সালে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ট্রাস। লকডাউনে পার্টিসহ একাধিক কেলেঙ্কারি ও মন্ত্রিসভার সদস্যদের একযোগে পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে গত জুলাইয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ও কনজারভেটিভ দলের নতুন প্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। বরিস জনসনের উত্তরসূরি হিসেবে যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে প্রথমে অনেকে অংশ নিলেও ধাপে ধাপে এই দৌড় থেকে ছিটকে পড়েন। শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রাস সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক। চূড়ান্ত লড়াইয়ে কনজারভেটিভ দলের প্রায় ২ লাখ টোরি সদস্যের ভোটে সাবেক অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাককে পরাজিত করেন ট্রাস। সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে লিজ ট্রাসের জয় ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাজ্যের ইতিহাসে মার্গারেট থ্যাচার ও থেরেসা মে’র পর তৃতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন ৪৭ বছর বয়সী লিজ ট্রাস।
আরও পড়ুন
রংপুরে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মহানগর ও জেলা শাখার দ্বিবার্ষিক সম্মেলন
র্যাব রংপুরে ৩৫১.৩৮ গ্রাম হেরোইন সহ স্বামী-স্ত্রী আটক করেছে
দুর্নীতির ফাইল নষ্ট করতেই সচিবালয়ে আগুন: রংপুরে রিজভী