যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমান শনিবার দেশটির পশ্চিম উপকূল থেকে প্রশান্ত মহাসাগরের দিকে আসতে শুরু করে, তারা ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায়। এই আক্রমণে ব্যবহার করা হয় বিশেষ করে শক্তিশালী ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা, যা মূলত ভূগর্ভস্থ এবং পাথর ও কংক্রিটের নির্মাণকঠিন ঘাঁটি ধ্বংসের জন্য তৈরি।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ইরানের ফোরদো পারমাণবিক কেন্দ্রের ওপর তাঁরা ছয়টি ‘বাঙ্কার-বাস্টার’ বোমা বর্ষণ করেছেন। এটি ছিল আগের ধারণার চেয়ে বেশি, যেখানে কেবল দুটি বোমা ব্যবহারের পরিকল্পনা ছিল। তিনি আরও জানান, এই পরিমাণ বিস্ফোরণ ইরানের অত্যন্ত সুরক্ষিত ওই পারমাণবিক কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজন হয়েছিল।
আক্রমণের পর, মার্কিন বোমারু বিমানগুলো দ্রুত পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, তারা মধ্যপ্রাচ্য থেকে গুয়ামের মার্কিন বেসের দিকে দ্রুত ফিরে গেছে। এই হামলার মাধ্যমে মার্কিনী বাহিনী ইরানের ভূগর্ভস্থ পারমাণবিক প্রকল্পগুলোকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
একই সময়, মার্কিন সাবমেরিন থেকে ৩০টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়, যা নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর টার্গেট করে আঘাত হানে। এই সাবমেরিনগুলো প্রায় ৪০০ মাইল দূরে অবস্থান করছিল।
ইসরায়েল আগে জানিয়েছিল, ১৩ জুন তারা প্রথমবার ইরানের এই মূল পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর আঘাত হানে, যার ফলে নাতাঞ্জ কেন্দ্র ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই দু’টি কেন্দ্রটি ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অর্থাৎ পারমাণবিক কর্মসূচির মূলভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
বাঙ্কার-বাস্টার বোমা হলো খুবই শক্তিশালী এক ধরনের অস্ত্র, যা মাটির নিচে বা পাহাড়ের গভীর স্তরেও নির্মিত কঠিন কংক্রিটের ঘাঁটি ধ্বংস করে ফেলতে পারে। এই হামলা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছে, যেখানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর মার্কিন ও ইসরায়েলি ‘সতর্কতাও’ জোরালো হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন
ইসরাইলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় আহত ১১, উত্তেজনা বৃদ্ধি
তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়া নিয়ে জাতিসংঘের পরমাণু সংস্থার আপডেট
ইরান কখনোই আপস করবে না : খামেনি