অনলাইন ডেস্ক :
অনলাইনে টিকিট বিক্রি নিয়ে বারবার আশ্বাস দেওয়া হলেও কিছু কারণে তা এখনও করা যাচ্ছে না বলে দাবি বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরির। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও করতে না পারার দায় নিজের কাঁধে নিয়ে তিনি বললেন, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ থেকেই এই ব্যবস্থা রাখা হবে। যে কোনো সিরিজ-টুর্নামেন্টের ¯্রফে একদিন বা দুই দিন আগে থেকে টিকিট বিক্রি শুরু করার ধরা দীর্ঘদিন ধরেই অনুসরণ করে আসছে বিসিবি। অবর্ণনীয় ভোগান্তি ও কষ্ট সয়ে ক্রিকেট অনুসারীদের টিকিট কিনতে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও অনেকের সৌভাগ্য হয় না টিকিট পাওয়ার। কালোবাজারিদের দাপট তো আছেই। একসময় অনলাইনেও কিছু টিকিট ছাড়া হতো। তবে সেটি বন্ধ আছে দীর্ঘদিন ধরেই। সবশেষ গত বিপিএলে টিকিট বিক্রি শুরু হয় আসর শুরুর একদিন আগে থেকে। এবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও মাঠের লড়াই শুরু বুধবার, টিকিট বিক্রি শুরু হবে মঙ্গলবার। টিকিট নিয়ে এমন অব্যবস্থাপনা ক্রিকেটের বিশ্বের অন্য কোনো দেশে বিরল। বিসিবিতে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্নই ছুটে যায় প্রধান নির্বাহীর দিকে, এখনও কেন সম্ভব হচ্ছে না অনলাইনে টিকিট বিক্রি। তিনি পুরনো কথাগুলিই আবার বলে শোনালেন নতুন আশ্বাস। “অবশ্যই সম্ভব হবে, যদি আমরা করতে পারি এবং আমাদের সেই পরিকল্পনা রয়েছে। কিছু কারণে আমরা এবারও করতে পারিনি। আপনি যেটা বললেন, আসলেই মানুষের কষ্ট হয়। এটা (অনলাইনে টিকিট) কিছু কমফোর্ট দিতে পারে অবশ্যই, যদি অনলাইন বা ইউজার ফ্রেন্ডলি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম থাকে। এবারও পারিনি করতে। চেষ্টা করব আগামী অন্তত আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে যেন থাকে।” ‘কিছু কারণ’ আসলে কী কী, তা সরাসরি জিজ্ঞেস করার পর সমস্যার কিছুটা ইঙ্গিত মিলল তার কথায়। “সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। প্রযুক্তি ব্যবহার করে যদি এটা করা যায়ৃ খুব একটা জটিল প্রক্রিয়া নয়। কিছু স্পন্সরের বিষয় থাকে, কিছু বাণিজ্যিক ব্যাপার থাকে। এই বিষয়গুলো আমরা চূড়ান্ত করতে পারিনি বলে।” “হয়তো আমরা নিজেরা সরাসরি করে ফেলতে পারতাম। তবে একটা প্ল্যাটফর্ম, এরপর অন্যান্য যে বিষয়গুলো থাকে, এগুলো করে আমরা করে ফেলতে পারব।” টিকিটে সাধারণত ওই সিরিজ বা টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর ও অন্যান্য স্পন্সরদের নাম-লোগোর ছাপ থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেই স্পন্সরগুলি নির্ধারিত হয় একদম শেষ মুহূর্তে। স্পন্সর সংক্রান্ত জটিলতার ক্ষেত্রে বিসিবির প্রধান নির্বাহী হয়তো ইঙ্গিত করলেন সেদিকেই। তবে পেশাদার একটি সংগঠনে যে এসব অজুহাত ধোপে টেকে না, সেটিও একরকম মেনেই নিলেন নিজামউদ্দিন চৌধুরি। “অবশ্যই প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায় তো আমাকেই নিতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এখন আমরা পেশাদার সিস্টেমের মধ্যে চলে এসেছি বললিও হবে না, ঢুকে গিয়েছিৃ আপনারা দেখেছেন, আমাদের যারা ভলান্টারি সার্ভিস দেয়, তাদের ভূমিকা খুব সীমিত হয়ে গিয়েছে। আমাদের যে বিসিবির পেশাদার ম্যানেজমেন্ট টিম আছে, এই টিমই পুরো ইভেন্ট পরিচালনা করছে। সেক্ষেত্রে দায়িত্বটি আমাদের কাঁধেই আসে এবং প্রধান নির্বাহী হিসেবে আমাকেই বলতে হবে।” আগে নানা সময়ে আশ্বাস দেওয়া হলেও বাস্তবে প্রতিফলন পড়েনি। আয়ারল্যান্ড সিরিজ থেকে সত্যিই হবে কি না, এই প্রশ্নে প্রধান নির্বাহীর উত্তর, “আমি আত্মবিশ্বাসী। অন্তত নির্দিষ্ট শতাংশ টিকিট অনলাইনে দেওয়ার প্ল্যাটফর্ম আমরা প্রস্তুত করে ফেলব।” অনেক কষ্টে টিকিট কেটে খেলা দেখতে মাঠে ঢুকলেই ভোগান্তির শেষ নয়। বাংলাদেশের সব মাঠেই খাবারের দাম রাখা হয় সাধারণ দামের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি। বিশ্বের বিভিন্ন মাঠেই অবশ্য বাইরের চেয়ে খাবার বা সেবার মূল্য একটু বেশি থাকে অনেক সময়। তবে বাংলাদেশে তা অসহনীয় মাত্রায় দেখা যায় অনেক সময়ই। সবশেষ বিপিএলেও এটি নিয়ে দর্শকদের অনেক অভিযোগ ছিল। প্রধান নির্বাহী জানালেন, সংশ্লিষ্টদের তারা সতর্ক করে দিয়েছেন এ ব্যাপারে। “আমি জানি বিষয়টি। এটা আমাদের নজরে এসেছে। যখন আমার কাছে বিষয়টি আসে, তাৎক্ষনিকভাবে সব ভেন্ডরকে ডেকে প্লে অফের আগে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে যে, তারা যদি এগুলো আবার করে বা আমাদের জানাশোনায় আসে, ভবিষ্যতে আমরা তাদেরকে বরাদ্দ দেওয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করব না।” বিসিবি থেকে খাবারের সর্বোচ্চ দাম নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয় বলেও নিশ্চিত করলেন প্রধান নির্বাহী। সামনে খাবারের দাম নিয়ে নজরদারি হবে বলেও তিনি জানালেন। “অবশ্যই আমাদের মূল্য নির্দিষ্ট করা থাকে। তার পরওৃ ধরুন, সরকারও তো অনেক নিয়ম-কানুন বেঁধে দেয়, তার পরও অনেক রকম বিষয় চলে আসে। এগুলোকে আমাদের আরও সতর্ক থাততে হবে। আমাদের যে ভলান্টিয়ার টিম আছে, তাদেরকে বলে দিয়েছি, এই ধরনের কোনো কিছু নজরে এলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। আমার মনে হয়, (বিপিএলের) এলিমিনিটের ও ফাইনালে কিছুটা হলেও প্রভাব ছিল, ওদের সঙ্গে বৈঠকের পর।”
আরও পড়ুন
তামিমের অর্ধশতকে দেড়শ’র আগেই থামল ঢাকা
সুপার ওভারে ইংল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশের মেয়েরা
ভক্তদের বড় সুখবর দিলেন বার্সেলোনা সভাপতি