রংপুর ব্যুরো:
রংপুরের তিন উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগী রোগী শনাক্ত হয়েছেন। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) থেকে আটজন অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়।বিষয়টি মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে নিশ্চিত করেছেন রংপুরের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. রুহুল আমিন। তিনি বলের প্রথমে পীরগাছা উপজেলায় ,পরে মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্স উপসর্গের রোগী পাওয়া গেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
গত আগস্টের শুরুতে হঠাৎ করে পীরগাছায় একের পর এক গবাদি পশুর মৃত্যু হতে থাকে। এরপর টনক নড়ে স্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের। পরে রোগের প্রকোপ ও প্রাদুর্ভাব নজরদারি করা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের প্রতিনিধি দল ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছায় গিয়ে ১২ জনের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। এরমধ্যে আটজনের শরীরে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়।
চিকিৎসকরা বলছেন, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত গবাদিপশুর শ্লেষ্মা, লালা, রক্ত, মাংস, হাড়, নাড়িভুঁড়ির সংস্পর্শে এলে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগ গবাদিপশু থেকে মানুষে ছড়ায়, তবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। মানুষের শরীরে এ রোগের প্রধান লক্ষণ হচ্ছে চামড়ায় ঘা সৃষ্টি হওয়া। এজন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগকে গরু-ছাগলের প্রতিষেধক টিকা কার্যক্রম জোরদার করার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় ৩০ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেনি, কিন্তু বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা নিয়েছেন এ রকম ২০ জন রোগী আছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুহাম্মদ তানভীর হাসনাত রবিন বলেন, সব মিলে ৫০ জন রোগীর তথ্য আমাদের কাছে আছে। যারআক্রান্ত, তারা যাতে শঙ্কিত না হন, এজন্য তাদের সচেতন করতে কিছুদিন আগে আক্রান্ত এলাকায় মেডিকেল টিম গিয়েছিল, সেখানে ১৫-২০ জন রোগীর সঙ্গে দেখা হয়েছে, যাদের ৯০ শতাংশ সুস্থ হয়েছেন।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ জানান, ‘রংপুর জেলায় প্রায় ১৩ লাখ গরু, ছাগল ও ভেড়া রয়েছে। ২৬ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত পীরগাছা, কাউনিয়া, মিঠাপুকুর ও রংপুর সদরে ১ লাখ ৬৫ হাজার গবাদিপশুকে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে। আতঙ্কের কোনো কারণ নেই। টিকাদান কার্যক্রমের পর নতুন করে গবাদিপশুতে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়নি।’
তিনি আরও জানান, ‘প্রাণিসম্পদ বিভাগ ইতোমধ্যে মসজিদ, মন্দির, হাটবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন
কুড়িগ্রামে টিসিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত
সাপাহারে আবারো এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার
রংপুর জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় আগামী ১২ই অক্টোবর রোববার থেকে সাড়ে ৮ লাখ শিশু-কিশোরকে টাইফয়েড টীকা দেয়া হবে