আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর :
সারাদেশে আলুর দাম নিয়ে যখন চরম অসন্তোষ ঠিক তখনই রংপুরে উঠতে শুরু করেছে আগাম জাতের নতুন আলু। এতে আলুর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি দাম কমাতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে নতুন আলুর ভালো দাম পেয়ে খুশি আলু চাষিরাও।
রংপুর কৃষি অফিসের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৫ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১২-১৩ হাজার হেক্টরে রয়েছে আগাম জাতের আলু। সব মিলিয়ে এ জেলার জমি থেকে প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশের মধ্যে আলু উৎপাদনে রংপুর দ্বিতীয় বৃহত্তম জেলা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আলুতে তেমন বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি। রংপুর জেলার অনেক স্থানে আগাম জাতের আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আলুর ভালো ফলন হওয়ায় ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, রংপুর সদর উপজেলার লাহিড়িরহাট এলাকার ক্ষেতে আলু তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। ক্ষেত থেকে কেউ আলু তুলছেন কেউ সেই আলু ট্রাকে বা অন্য বাহনে নিয়ে যাচ্ছেন সরাসরি বাজারে।
আগাম আলু নিয়ে কথা হয় আলু চাষি আকমল হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, আগাম জাতের আলুর ভালো উৎপাদন হয়েছে। জমিতে থাকা অবস্থায় আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে। তিনি আরও জানান, একরপ্রতি এবার সব খরচ বাদ দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা লাভ হবে। আগাম আলুর কারণে এই লাভটা হচ্ছে।
বদরগঞ্জ উপজেলার সাহাপুর গ্রামের আলু চাষি রহিম মিয়া বলেন, এবার আমি পাঁচ বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছি। আলুর ফলন ভালো হয়েছে। বাজারে নতুন আলুর দাম এখন পর্যন্ত ভালো আছে। এই বাজার থাকলে আলু চাষিরা লাভবান হবেন। তবে সবেমাত্র আলু উঠতে শুরু করেছে। পুরোদমে আলু উঠতে আরও সময় লাগবে। সেই সময় পর্যন্ত দাম ভালো নাও থাকতে পারে বলে শঙ্কার কথা জানান তিনি।
সদর উপজেলার আলু ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান বলেন, আমরা আলু ব্যবসায়ীরা আলু চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি মাঠের আলু ক্রয় করছি। এতে করে সব খরচ বাদ দিয়ে আমাদের কেজিপ্রতি আলুতে ১ থেকে ২ টাকা লাভ হয়। এতে করে আলু চাষিরা আলু বিক্রিতে লাভবান হচ্ছে।
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, মাঠ থেকে সরাসরি আলু কেনায় বাজার সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ভোক্তা পর্যায়ে আলুর নিয়ন্ত্রণ থাকবে। বাজারে দাম কমে আসবে।
এ বিষয়ে রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো: রিয়াজ উদ্দিন জানান, রংপুরে এবারে আলুর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৫ লাখ মেট্রিক টন। চলতি মৌসুমে জেলায় ৫৫ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। এর মধ্যে থেকে আগাম জাতের আলু বাজারে উঠেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতি হেক্টর জমিতে ৩ থেকে ৪ মেট্রিক টন আলু বেশি উৎপাদন হবে।
তিনি আরও বলেন, আগাম আলুর কারণে বাজার ব্যবস্থাপনা ঠিক থাকলে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং দাম কমে আসবে|
আরও পড়ুন
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় কনস্টেবল মুকুল কারাগারে
শীতে শিশুদের সুস্থ রাখবে যেসব খাবার