নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর:
‘আন্তর্জাতিক প্রসবজনিত ফিস্টুলা নির্মূল দিব্স’ উপলক্ষ্যে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি সভা কক্ষে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় । সোমবার (২২ মে) দুপুরে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএইপএ) বাংলাদেশ ও ল্যাম্ব হাসপাতালের এফআরআরইআই প্রজেক্টের কারিগরি সহায়তায় এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় এফআরআরইআই প্রজেক্ট (ল্যাম্ব) ম্যানেজার মাহাতাব উদ্দিন লিটন বলেন, ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে। বিলম্বিত প্রসব বা বাধাগ্রস্ত প্রসব, বাল্যবিবাহ ও কম বয়সে গর্ভধারণ, জরায়ুতে অস্ত্রোপচার, অদক্ষ ধাত্রী বা প্রতিবেশীর মাধ্যমে ডেলিভারি করানোসহ সচেতনতার অভাবে ফিস্টুলা রোগ বাড়ছে।
ফিস্টুলা রোগ কী, আক্রান্তের কারণ, বর্তমান পরিস্থিতি, শনাক্তের উপায়, চিকিৎসাসেবা ও প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন ডেপুটি প্রজেক্ট ম্যানেজার ডা. তাহমিনা খাতুন। আরও বক্তব্য রাখেন এফআরআরইআই প্রজেক্টের (ল্যাম্ব) মনিটরিং এন্ড ডকুমেন্টেশন কো-অর্ডিনেটর কামরুজ্জামান, জেলা সমন্বয়কারী মঞ্জু আরা বেগম, সিনিয়র সাংবাদিক মেরিনা লাভলী, প্রেসক্লাব রংপুরের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী প্রমুখ।
আলোচনায় অংশ নেন ২৫ বছর পর ফিস্টুলামুক্ত হওয়া পেয়ারি বেগম। দীর্ঘ সময়ের কষ্ট আর লাঞ্ছনার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। শাড়ির আঁচলে চোখের কোণে জমাট বাধা টলমলে জল মুছতে মুছতে পেয়ারি বেগম বলেছেন তার যন্ত্রণার কথা।
চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী এ নারী বলেন, বিয়ের একবছর পর নরমাল ডেলিভারীর মাধ্যমে আমার বাচ্চা প্রসব হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমার ছেলে সন্তানটি মৃত ছিল। সন্তান প্রসবের পর থেকে আমার শরীর থেকে দুর্গন্ধ বের হতো। প্রথমে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। বরং দিনে দিনে আমার থেকে মানুষ দূরে সরে যেতে থাকে। সংসারে বিভিন্নভাবে যন্ত্রণা, লাঞ্ছনা ও কষ্ট করেছি। অর্থাভাবে চিকিৎসাও করাতে পারিনি। দীর্ঘ দুই যুগ পর জানতে পারি আমি ফিস্টুলা রোগে আক্রান্ত। এরপর ল্যাম্ব হাসপাতালে আমি চিকিৎসা নিয়ে এখন আমি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করছি।
প্রসঙ্গত, নারী জননাঙ্গের ফিস্টুলার লক্ষণ ও শনাক্তের সহজ উপায় হচ্ছে রোগীর সব সময় প্রস্রাব বা পায়খানা অথবা উভয়ই ঝরতে থাকবে। সে ক্ষেত্রে প্রস্রাব বা পায়খানার সময় রোগীর কোনো চাপ বা বেগ অনুভব হবে না। সব সময় কাপড় ভেজা থাকবে। এ সমস্যা শুরু হবে সন্তান প্রসবের পর কিংবা তলপেট বা জরায়ুতে কোনো অপারেশনের পর। অর্থাৎ ফিস্টুলা হচ্ছে মাসিকের রাস্তার সঙ্গে মূত্রথলি অথবা মলাশয়ের এ বা একাধিক অস্বাভাবিক ছিদ্র হয়ে যুক্ত হওয়া। ফলে মাসিকের রাস্তা দিয়ে সব সময় প্রস্রাব বা পায়খানা অথবা উভয়ই ঝরতে থাকে।
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ দেশের ওলামাদের নিয়ে তাচ্ছিল্য করেছে —রংপুরে শামসুজ্জামান দুদ
রংপুরে এক্্র ক্যাডেটস্্ মিলনমেলা অনুষ্ঠিত
কোম্পানীগঞ্জে অস্ত্রসহ ব্যবসায়ীকে আটক করলো সেনাবাহীনী