রংপুর ব্যুরো:
রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় জড়িত যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার সাংবাদিক সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রোববার দুপুরে তাকে গংগাচড়া আমলী আদালতে পাঠালে সিনিয়র জুডিশিয়াল-১ আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় আগামীকাল সোমবার উম্মুক্ত আদালতে শুনানীর দিন ধার্য্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, আগামীকাল সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে ওই আসামির রিমা- আবেদন করা হবে। তাকে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান সেলিম তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে সরাসরি উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করেছে বলে তথ্য প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই সাংবাদিককে রংপুর সদরের হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর চওড়াপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে আটক করে গংগাচড়া থানায় সোপর্দ করে সেনাবাহিনী। পরে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় অজ্ঞাত লোকজন ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলা চালায়। ওই হামলায় অন্তত ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে পুলিশের এক কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) বাদী হয়ে গংগাচড়া মডেল থানায় ১ হাজার থেকে ১২শ’ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দ-বিধির ১৪৯/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৩৭৯ /৩৮০/ ৪২৭/ ৩৪ ধারায় দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান সেলিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে সরাসরি উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করেছিল। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত গ্রেফতার সেলিম সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ছিল। আলদাদপুরের হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় সে জড়িত ছিল এবং হামলার জন্য জনগণতে উস্কে দিয়েছিল বলে জানা গেছে। যাতে করে বর্তমান সরকার বেকায়দায় পড়ে যায়। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান সেলিম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি। তারাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের সাবেক সাধারন সম্পাদক। সাবেক রংপুর জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য। বর্তমান আওয়ামীলীগ সদর উপজেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা রামদা, ছুরি ও পিস্তল নিয়ে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালিয়েছিল। এ সময় নিহত হয়েছিল সাজ্জাদ হোসেন, মুসলিম উদ্দিন মিলন, আব্দুল্লাহ আল তাহির, মেরাজুল ইসলাম মেরাজ। কথিত সাংবাদিক সেলিমের নেতৃত্বে সেইদিন পাগলাপীর থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী সেই হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের আগে কোতয়ালী সদর থানায় নিরপরাধ ও নির্দলীয় ছাত্র জনতার নামের তালিকা পাঠিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি ও অর্থ আদায়। চাঁদাবাজি ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে। যা পুলিশ তদন্ত করছে।
আব্দুর রহমান মিন্টু
রংপুর ব্যুরো চীফ
আরও পড়ুন
পীরগঞ্জে যৌথ বাহিনীর অভিযানে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী মিন্টু
বাবুগঞ্জে ঝুলন্ত অবস্থায় যুবকের মরদেহ উদ্ধার
শাবিপ্রবিতে তিনটি দোতলা বাসের উদ্বোধন