রংপুর :
রংপুর কৃষি অঞ্চলের পাঁচ জেলায় এ বছর পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। এ মৌসুমে এ অঞ্চলে মোট পাট উৎপাদিত হয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৯২১ বেল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের থেকে জানা গেছে ,এ মৌসুমে রংপুরে ৯ হাজার ৪৫০ হেক্টর, গাইবান্ধায় ১৩ হাজার ৮২২ হেক্টর, কুড়িগ্রামে ১৬ হাজার ৫০ হেক্টর, লালমনিরহাটে ৩ হাজার ৯১৫ হেক্টর ও নীলফামারীতে ৫ হাজার ২২০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন কৃষকরা।
পাটের বাম্পার ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের কৃষকরা। স্থানীয় বাজারে জাত ও মান ভেদে প্রতি মণ (৪০ কেজি) পাট ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।মিঠাপুকর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বুজরুক হরিপুর গ্রামের বর্গা চাষি মো: লালটু মিয়া জানান ১৭ শতাংশ জমিতে চাষ পাট চাষ করেছেন । তার সার বিজ ¤্রমিক সহ দার খবচ হয়েছে ৪ হাজার টাকা । কিন্তু তিনি বিক্রি করেছেন ৬হাজার ৪শত টাকা ।রংপুর সদর, বদরগঞ্জ ও মিঠাপুকুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের পাট চাষি মনসুর আলী, আফতাব মাহবুবুল ও মানিক মিয়া জানান, তারা এ বছর পাটের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। প্রতি মণ পাট মানভেদে ৩ হাজার ৮০০ থেকে ৪ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, মৌসুম শেষে দেখা গেছে, কৃষকরা ৪৮ হাজার ৮৫৭ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করেছেন। এবার পাট চাষের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ২ হাজার ৮১২ হেক্টর কম জমিতে আবাদ হয়েছে।কৃষকরা বেশিরভাগ জমিতে উন্নত জাতের পাট চাষ করেছেন। তবে, অন্যান্য ফসল ফলানোর কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি পূরণ হয়নি।
কৃষিবিদ মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে গত সপ্তাহ পর্যন্ত রংপুর কৃষি অঞ্চলের কৃষকরা পাটের আঁশ ছাড়ানো শেষে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৯২১ বেল পাট উৎপাদন করেছেন। মৌসুমে হেক্টরপ্রতি গড় ফলন ১৩.৬৭ বেল। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, সদ্য শেষ হওয়া খরিফ-১ মৌসুমে এ অঞ্চলের ৫১ হাজার ৬৬৯ হেক্টর জমি থেকে ৭ লাখ ৯ হাজার ৭৯৯ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল সরকার।
তিনি আরও জানান পাটের অতীত গৌরবের ইতিহাস ফিরিয়ে আনতে এর চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষকদের বীজ, সার, প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন এবং বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের বুড়িরহাট হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক ড. মো. আবু সায়েম বলেন, সরকারের কার্যকর পদক্ষেপে এবার পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে এবং কৃষকরা ভালো দাম পাচ্ছেন।এ মৌসুমে তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টিপাতের কারণে বেশিরভাগ কৃষক রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট গাছ থেকে আঁশ সংগ্রহ করেছে।
তিনি আরও বলেন, পাট চাষে পাটের আঁশ ও পাট খড়ি বিক্রি করে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি জমি উর্বর হচ্ছে। কারণ, পাট কাটার পর এর পাতা ও শিকড় জৈব সারে পরিণত হয়ে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি করে।##
আরও পড়ুন
মুরাদনগরে মোটরসাইকেল আরোহীকে মারধর, ২ যুবক গ্রেপ্তার
নাটোরে বিদেশি মদ ও ইয়াবাসহ আটক ২
গঙ্গাচড়ায় সরকারিভাবে গ্রাম পুলিশের মাঝে বাইসাইকেল ও ছাতা বিতরণ