নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের বিপুল পরিমাণ প্রক্রিয়াজাত চিংড়ি রফতানি জটিলতার মুখে পড়েছে। মূলত হিমায়িত কনটেইনারের অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। শিপিং কোম্পানিগুলো চীন থেকে মালামাল রফতানিতে বেশি ব্যস্ত থাকায় দেশে হিমায়িত কনটেইনার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে সময় মতো রফতানি করা যাচ্ছে না প্রক্রিয়াজাত চিংড়ি। এমন পরিস্থিতিতে রফতানিকারকরা বিদেশি ক্রেতাদের ক্রয় চুক্তি বাতিলের আশঙ্কায় রয়েছে। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, হিমায়িত কনটেইনারের অভাবে দেশের প্রায় সাড়ে ৫শ’ কোটি টাকার প্রক্রিয়াজাত চিংড়ি রফতানিতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম ১০ দিনে মোংলা বন্দর দিয়ে চিংড়ি রফতানি করা যায়নি। দেশের খুলনা জোন থেকে নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ফান্স, ইতালি, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপীয় দেশগুলোতে এদেশ থেকে রফতানিকৃত চিংড়ির ৮৫ শতাংশ যায়। মোংলা বন্দর থেকে ফিডার ভেসেলে (ছোট জাহাজ) চিংড়ির কনটেইনার সিঙ্গাপুরে নেয়া হয়। সেখানে থেকে মাদার ভেসেলে ওই কনটেইনার ইউরোপের দেশগুলোতে পাঠানো হয়। কিন্তু বর্তমানে হিমায়িত কনটেইনারের অভাবে চিংড়ি রফতানি করা যাচ্ছে না।
সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর শুরুর দিকে চীন থেকে রফতানি অনেক কমে গিয়েছিল। কিন্তু ওই ধাক্কা সামলে দেশটি বর্তমানে তাদের রপ্তানি বহু গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সেখানে কনটেইনারের চাহিদা বেশি থাকায় শিপিং কোম্পানিগুলো চায়নামুখী হয়ে পড়েছে। গত বছর যেসব কনটেইনার ২০০০-২৫০০ ডলারে ভাড়া পাওয়া যেত, বর্তমানে ওই কনটেইনার ১০ হাজার ডলারেও পাওয়া যায় না। আর কনটেইনার সঙ্কটের সমাধান না হলে রফতানিকারকদের বড় ধরনের বিপাকে পড়তে হবে।
এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি এস হুমায়ুন কবির জানান, ২০ জুনের পর থেকে বন্দরে হিমায়িত কনটেইনারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। শিপিং কোম্পানিগুলোর সঙ্গে দেন-দরবার করলে তারা জুন মাস পর্যন্ত কনটেইনার দিয়ে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু বর্তমানে জুলাই মাসেও কনটেইনার না পাওয়ায় খুলনা জোনের ৪০টি চিংড়ি কোম্পানিতে প্রায় ৬ হাজার টন চিংড়ি ও চট্টগ্রাম জোনের ২০টি কোম্পানিতে আরো ২ হাজার টন রফতানির জন্য প্রক্রিয়াজাত চিংড়ি আটকে গেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ওই চিংড়ি রফতানি করা না গেলে কোম্পানিগুলো আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া ওই চিংড়ি রফতানি করতে না পারলে বাজার থেকে নতুন চিংড়ি কেনাও সম্ভব হবে না। ফলে চাষিরাও দাম না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরও পড়ুন
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খাসি-মুরগি-মাছ
পাঁচ বছর বিরতির পর জাহাজ রপ্তানিতে ফিরলো ওয়েস্টার্ন মেরিন
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়