ঢাকার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মহাসম্মেলনে যোগ দিতে শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকাল থেকেই মানুষের ঢল নামে। কেউ হেঁটে, কেউ নিজস্ব যানবাহনে, আবার কেউ বাস ও মেট্রোরেল ব্যবহার করে সম্মেলনস্থলে পৌঁছান। সকাল ৯টা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়া এ মহাসম্মেলনে শুরুতেই ব্যাপক জনসমাগম লক্ষ্য করা যায়।
মহাসম্মেলনের দায়িত্বশীল মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী জানান, কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করার দাবিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের প্রখ্যাত আলেমরা উপস্থিত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তানের সভাপতি মুফতি ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তানের মহাসচিব মাওলানা হানিফ জালন্দরি, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ড নায়েবে আমির শায়খ আব্দুর রউফ মক্কি, পাকিস্তানের ইউসুফ বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম ড. আহমাদ ইউসুফ বিন্নুরী, পাকিস্তানের মাওলানা ইলিয়াছ গুম্মান, ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের মুহতামিম মুফতি আবুল কাসেম নোমানী এবং মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়খ মুসআব নাবীল ইবরাহিম।
বাংলাদেশ থেকেও অংশ নিচ্ছেন বহু খ্যাতিমান আলেম। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন—হেফাজতে ইসলামের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, দারুল উলুম হাটহাজারীর মুহতামিম মাওলানা খলিল আহমাদ কুরাইশী, আল হাইয়াতুল উলিয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আব্দুল মালেক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হকসহ আরও অর্ধশতাধিক দেশের বিশিষ্ট আলেম।
আয়োজক কমিটির প্রত্যাশা—খতমে নবুওয়তের পবিত্র আকিদা রক্ষায় বৈশ্বিক ঐক্যের এই মহাসম্মেলন লাখো মানুষের উপস্থিতিতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানকে এক অনন্য ঐতিহাসিক দৃশ্যপটে পরিণত করবে।
সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছেন সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির মাওলানা আবদুল হামিদ (পীর সাহেব, মধুপুরী)। তিনি পূর্বে সকল ঈমানদার মুসলমানকে এ আয়োজনে উপস্থিত থেকে খতমে নবুওয়তের আকিদা রক্ষার আন্দোলনে শামিল হওয়ার বিশেষ আহ্বান জানান।
মাওলানা আবদুল হামিদ মধুপুরী বলেন, কাদিয়ানি মতবাদ ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্বের বহু ইসলামি রাষ্ট্র ও সংগঠন ইতোমধ্যেই তাদের অমুসলিম ঘোষণা করেছে। পাকিস্তান, সৌদি আরবসহ একাধিক মুসলিম দেশে এ বিষয়ে স্পষ্ট নীতি রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা হয়নি, যা মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে নবী হিসেবে মানা খতমে নবুওয়ত—অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর শেষ নবী হওয়ার মৌলিক আকিদার বিপরীত। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশ সরকারও শিগগিরই কাদিয়ানিদের অমুসলিম হিসেবে ঘোষণা করবে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
‘গণভোটে চারটির কোনো একটি প্রশ্নে দ্বিমত থাকলে ‘না’ বলার সুযোগ কই’, প্রশ্ন রিজভীর
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে ‘আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস’ সংবিধানে পুনর্বহাল করবে: সালাহউদ্দিন
জামায়াত ক্ষমতায় আসলে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করবে: রফিকুল ইসলাম