October 19, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 17th, 2025, 6:10 pm

রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের সেবার মান উন্নত হয়েছে

নাজমুল হাসান(রুপঞ্জ প্রতিনিধি)
রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সার্বিক পরিবেশ সন্তোষ জনক।৩১ শয্যার হাসপাতালটি উন্নীত হয়েছে ৫০ শয্যায়। উন্নত সেবা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধায় আস্থা ফিরেছে রোগী সাধারণের মাঝে। হাসপাতালে কর্মরত কর্মচারী ও আগত রোগীরা জানান ডাক্তার আইভি ফেরদৌসের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার মান উন্নত হয়েছে।ডাক্তার আইভি ফেরদৌস ২০২২ সালে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করার পর পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনটিকে আমূল সংস্কার করে ৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে রোগীদের সেবার জন্য প্রস্তুত করেছেন।
এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে মাঠ পর্যায়ে ৭৮ জন স্বাস্থ্য সেবা কর্মী কর্মরত রয়েছেন। রূপগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন দুটি পৌরসভায় কমিউনিটি হেলথ সার্ভিস প্রোভাইডারে ৪১ জন সেবা প্রদান করে থাকেন। এছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অধীনস্থ ১৭ জন ডাক্তার,২৯ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স, অফিস স্টাফ ২৫ জন, আউটসোর্সিং এ ২৪ জন কর্মরত রয়েছে।

হাসপাতাল অটোমেশন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে হাসপাতাল বহির্বিভাগের উন্নয়ন কার্যক্রম একটি দৃষ্ঠান্ত স্থাপন করেছে। এছাড়াও উপজেলা লেভেলে হরমোন পরীক্ষা TSH.T3,T4, ডায়াবেটিকস পরীক্ষা,HbA,C,লিপিড প্রোফাইল,আল্ট্রাসনোগ্রাম, ইসিজি সহ সকল ধরনের পরীক্ষা ও রোগ নির্ণয় সুবিধা চালু হয়েছে এই ৫০ শয্যা বিশিষ্ঠ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।গত ফেব্রুয়ারি মাসে অত্যাধুনিক ফোর-ডি আলট্রাসনোগ্রাফী মেশিন সংযোজন করা হয়েছে।এখানে সার্বক্ষণিকভাবে ছয় জন এমবিবিএস ডাক্তার (মেডিসিন, সার্জারি, গাইনিও অন্যান্য) ১৭ জন নার্স চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত আছেন। প্রতিদিন এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীদের সংখ্যা প্রায় ৬ শতাধিক কখনো কখনো ৮০০ রোগীকেও সেবা দেওয়া হয়। হাসপাতালটি ৫০ শয্যা হলেও ভর্তি রোগীর সংখ্যা শতাধিক ছারিয়ে যায় কখনো কখনো,এজন্য তাদেরকে বাড়তি বেডের ব্যবস্থা করতে হয়। এছাড়াও গর্ভবতীদের নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে নরমাল ডেলিভারিতে উৎসাহিত করা হয়। ইপিআই কার্যক্রম শতভাগ সফল। তবে মাতৃসাস্থ্য ও শিশু স্বাস্থ্যের জন্য আরো সচেতনতা দরকার বলে মনে করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আইভী ফেরদৌস।

এক সময়ের জরাজীর্ণ রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন সেবা গ্রহীতাদের পদচারণায় মুখর। উদ্যোগ, দক্ষ ব্যবস্থাপনায় বদলে গেছে উন্নত সেবা ও আধুনিক সুযোগ-সুবিধা পেয়ে আস্থা ফিরেছে রোগী ও স্থানীয়দের। রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গত ২০২২ সালের পূর্বে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সন্ধ্যা নামলেই ভূতুড়ে অবস্থার সৃষ্টি হতো। সন্ধা নামলেই হাসপাতালের চতুর্পাশে এখন শুধু আলো আর আলো। হাসপাতালটিতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উপজেলা পর্যায়ে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ, আন্তঃবিভাগ ও বহির্বিভাগের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং সৌন্দর্যবর্ধন সার্বিক কার্যক্রম মাধ্যমে সফলতা এসেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আইভী ফেরদৌস বলেন, স্থানীয়দের সহযোগিতায় এবং ডাক্তার নার্স আয়াসহ সকলের প্রচেষ্টায় হাসপাতালের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। যার ফলে নিবিঘ্নে সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে। এছাড়াও বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে যা অচিরেই বাস্তবায়ন করা হবে। তবে উপজেলার দক্ষিণ নবগ্রাম এলাকায় সড়কে বিভিন্ন জায়গায় থানাখন্দে ভরা এজন্য যানজট সৃষ্টি হয় ফলে সেবা নিতে আসা রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। নদীর ওপার থেকে সেবা নিতে আসা রোগীদের নৌকা পারাপারের জন্য কিছুটা দূর্ভোগ পোহাতে হয়। নৌকা গুলোতে লাইফ বয়া না থাকায় ঝুকি নিয়েই তাদেরকে নদী পারাপার হতে হচ্ছে।

এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের ছাদ ও দেয়ালের প্লাস্টার খুলে খুলে পড়ছে। এজন্য নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে নতুন ভবন তৈরির জন্য বিভিন্ন সময়ে পত্র মারফত অবগত করা হয়েছে বলেও জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
নারায়ণগঞ্জ স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীআব্বাস উদ্দিন কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায় নি। তবে সহকারী প্রকৌশলী অর্নব দেবনাথ জানান,”এ বিষয়ে অফিসে সরাসরি এসে নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলতে পারেন”।

রূপগঞ্জে সড়কে বিভিন্ন স্থানে খানাখন্দের কারন ও জনদূর্ভোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আকতার হোসেন জানান, “বর্ষা মৌসুমে ভারী বৃষ্টিপাত ও প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সড়ক নির্মাণ কাজ কিছুটা ধীর গতিতে হচ্ছে, তবে আগামী নভেম্বরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।