অনলাইন ডেস্ক:
প্রতিদিনের রোজার ফিদিয়ার পরিমাণ হলো সাদকায়ে ফিতরের সমান খাবার বা তার মূল্য
রমজান মাস পেয়েও কেউ যদি অসুস্থতা বা বার্ধক্যের কারণে রমজানের ফরজ রোজা রাখতে না পারেন এবং ভবিষ্যতে এই রোজাগুলোর কাজা করতে পারবেন সেরকম সম্ভাবনাও না থাকে, তাহলে তিনি প্রতিদিনের রোজার পরিবর্তে ফিদিয়া আদায় করবেন অর্থাৎ একজন মিসকিনকে দুই বেলা খাবার খাওয়াবেন বা তার মূল্য দান করবেন।
কোরআনে অক্ষম ব্যক্তিদের রোজার ফিদয়া আদায়ের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো। রোজা নির্দিষ্ট কয়েক দিন। তবে তোমাদের মধ্যে যে অসুস্থ হবে, কিংবা সফরে থাকবে, তাহলে অন্যান্য দিনে সংখ্যা পূরণ করে নেবে। আর যাদের জন্য তা কষ্টকর হবে, তাদের কর্তব্য ফিদয়া- একজন দরিদ্রকে খাবার প্রদান করা। অতএব যে স্বেচ্ছায় অতিরিক্ত সৎকাজ করবে, তা তার জন্য কল্যাণকর হবে। আর রোজা রাখা তোমাদের জন্য কল্যাণকর, যদি তোমরা জান। (সুরা বাকারা: ১৮৪)
রোজা রাখার সক্ষমতা থাকলে ফিদিয়া আদায় করা যায় না। অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে ছুটে যাওয়া রোজার কাজা আদায় করার সক্ষমতা থাকলে কাজাই আদায় করতে হবে, ফিদিয়া দেওয়া যাবে না। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ফিদিয়ার আয়াতটি ওই সব অতিশয় বৃদ্ধ পুরুষ ও নারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, যারা রোজা পালনে অক্ষম। তারা প্রতিদিনের রোজার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে খাওয়াবেন। (সহিহ বুখারি: ৪৫০৫)
ফিদিয়ার পরিমাণ কতটুকু?
প্রতিদিনের রোজার ফিদিয়ার পরিমাণ হলো সাদকায়ে ফিতরের সমান খাবার বা তার মূল্য অর্থাৎ গম হলে সর্বনিম্ন ১ কেজি ৬৩২.৯৬ গ্রাম গম বা তার মূল্য এবং জব খেজুর, পনির ও কিশমিশ হলে সর্বনিম্ন ৩ কেজি ২৬৫.৯২ গ্রাম বা তার মূল্য কোনো দরিদ্র ব্যক্তিকে দান করতে হয়।
উল্লিখিত খাবারগুলোর বাজারদর অনুযায়ী টাকায় ফিদিয়া ও সদকাতুল ফিতরের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারিত হয়। গত বছর (১৪৪৫ হিজরি) বাংলাদেশ সরকারের সদকাতুল ফিতর নির্ধারণ কমিটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশে সাদাকাতুল ফিতরের পরিমাণ জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১৫ টাকা ও সর্বোচ্চ ২ হাজার ৯৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
ফিদিয়া কাদের দিতে হয়?
যারা জাকাত গ্রহণ করতে পারেন, তাদের ফিদিয়া দেওয়া যায়। অর্থাৎ দরিদ্র, অভাবগ্রস্ত বা ঋণগ্রস্ত ইত্যাদি ব্যক্তিদের ফিদিয়া আদায়ের নিয়তে খাবার খাওয়ালে বা তার মূল্য দান করলে ফিদিয়া আদায় হয়ে যায়।
কেউ ফিদিয়া আদায়ে অক্ষম হলে কী করবে?
দারিদ্র্যের কারণে কেউ যদি ফিদিয়া আদায় করতে অক্ষম হন, তাহলে আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। পরে কখনো সামর্থ্যবান হলে ফিদিয়া আদায় করে দেবেন।
রোজার ফিদিয়া আদায়ের পর সুস্থতা ফিরে পেলে করণীয়
কেউ যদি সুস্থ হয়ে ওঠা বা রোজা রাখার সক্ষমতা অর্জনের ব্যাপারে নিরাশ হয়ে তার জিম্মায় ওয়াজিব থাকা কাজা রোজার ফিদিয়া আদায় করে, কিন্তু পরবর্তীতে আবার রোজা রাখার সক্ষমতা ফিরে পায়, তাহলে তার জন্য ওই রোজাগুলোর কাজা আদায় করা আবশ্যক। পূর্বের আদায়কৃত ফিদিয়া বাতিল হয়ে যাবে এবং তা নফল সদকা গণ্য হবে।
আরও পড়ুন
ঋণগ্রস্তদের সহায়তায় জাকাত
এমপিও শিক্ষকদের বেতন-ঈদ বোনাস নিয়ে সুখবর দিলো মাউশি
যশোরে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস