অনলাইন ডেস্ক:
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত নবিজি মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা কথা বলা, মিথ্যা বা বাতিল কাজ করা এবং অজ্ঞতা ত্যাগ করে না, তার খাদ্য ও পানীয় ত্যাগ করার কোনো প্রয়োজন আল্লাহ তাআলার নেই। (সহিহ বুখারি)
এ হাদিসটি থেকে আমরা যে দিক-নির্দেশনা পাই
১. এ হাদিসটি থেকে আমরা বুঝতে পারি আল্লাহ তাআলা শুধু খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকার জন্য রোজা ফরজ করেননি; বরং তিনি রোজা ফরজ করেছেন একটি প্রজ্ঞাপূর্ণ উদ্দেশ্যে যা নবিজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই হাদিসে উল্লেখ করেছেন এবং আল্লাহ তাআলা কোরআনে উল্লেখ করেছেন তা হলো তাকওয়া অর্জন। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, হে ইমানদারগণ, তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। (সুরা বাকারা: ১৮৩) তাকওয়া হলো আল্লাহ তাআলার বিধান মেনে চলা, তাঁর ইবাদত ও আনুগত্য করা, তাঁর আদেশ পালন করা এবং তিনি যেসব কাজ করতে নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকা।
২. নবিজি (সা.) হাদিসটিতে তিনটি কাজের কথা বলেছেন যা করলে রোজাদারের রোজার সওয়াব কমে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। প্রথম কাজটি হলো, মিথ্যা বলা বা বাতিল কথা বলা। মিথ্যা বলা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, অপবাদ দেওয়া, পরনিন্দা করা, গালি দেওয়া, বিদ্রূপ করা, মন্দ নামে ডাকা ইত্যাদি সবই এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
এরপর নবিজি (সা.) বলেছেন, মিথ্যা বা বাতিল কাজ করা। শিরক বিদআতসহ যাবতীয় গুনাহের কাজ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
এরপর নবিজি (সা.) বলেছেন, অজ্ঞতা বা মূর্খতা অর্থাৎ নিজের প্রতি বা অন্য কারো প্রতি অজ্ঞতা। সব ধরনের গুনাহ অজ্ঞতার অন্তর্ভুক্ত; কারণ এগুলো আল্লাহ তাআলা, তাঁর মর্যাদা ও বিধান সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন, নিশ্চয় তওবা কবুল করা আল্লাহর জিম্মায় তাদের জন্য, যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কাজ করে। তারপর শীঘ্রই তাওবা করে। অতঃপর আল্লাহ এদের তওবা কবুল করবেন আর আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা নিসা: ১৭)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করে সে অজ্ঞ, তার অজ্ঞতার কারণেই সে মন্দ কাজ করে। (তাফসিরে তাবারি)
সুতরাং এ হাদিসটি থেকে আমরা বুঝতে পারি, রোজাদার ব্যক্তির জন্য সব ধরনের গুনাহ ও পাপ কাজ ত্যাগ করা অপরিহার্য, অন্যথায় তার রোজার কোনো মূল্য নেই। যে কোনো গুনাহই রোজাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং রোজার সওয়াব কমিয়ে দেয়।
৩. এ হাদিস থেকে আমরা বুঝতে পারি আল্লাহ তাআলা চান, আমরা যেন রোজার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার আনুগত্যের প্রশিক্ষণ লাভ করি। তাকওয়া অর্জন করতে পারি। তাই রোজার মাসে আমাদের উচিত রোজা রাখার পাশাপাশি সব গুনাহের অভ্যাস ত্যাগ করে সত্যিকার মুত্তাকি হওয়ার চেষ্টা করা। তাহলে আমাদের রোজা রাখার কষ্ট সার্থক হবে। আমাদের রমজান সফল হবে।
আরও পড়ুন
ওরিয়নের ওবায়দুল ও পরিবারের ৩১ ব্যাংক হিসাবের ২০ কোটি টাকা অবরুদ্ধের আদেশ
মা ছেলের ভালোবাসা দেখতে খুব সুন্দর লাগছে
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর মৃত্যুতে ফখরুলের শোক প্রকাশ