আফ্রিকার দেশ লিবিয়ার উপকূলে ৭৫ জন শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৬০ জন নিহত হয়েছেন। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়।
জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা জানিয়েছে, জীবিতদের মধ্যে ২৪ জনকে ইতোমধ্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। আইওএম এক্স (টুইটার) পোস্টে জানায়, সমুদ্রপথে এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঠেকাতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এর আগে গত মাসে ইয়েমেন উপকূলে শরণার্থী বোঝাই একটি নৌকা ডুবে ৮৬ জন প্রাণ হারান এবং বহু মানুষ নিখোঁজ হন। শুধু গত বছরেই ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে অন্তত ২ হাজার ৪৫২ জন অভিবাসী ও শরণার্থীর মৃত্যু ঘটে। আইওএমের ভাষায়, এ রুটটি এখন শরণার্থীদের জন্য “মৃত্যুর উপত্যকা” হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমানে লিবিয়ায় প্রায় ৮ লাখ ৬৭ হাজার অভিবাসী অবস্থান করছেন। ২০১১ সালে মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে দেশটি ইউরোপে পৌঁছাতে ইচ্ছুক অভিবাসীদের প্রধান ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হয়েছে। একসময় তেলসমৃদ্ধ এই দেশে বহু আফ্রিকান শ্রমিক কাজের সন্ধানে যেতেন। কিন্তু গাদ্দাফি পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সংঘাত ও সহিংসতার কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার নিয়েছে।
সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে শরণার্থীদের মৃত্যু প্রায় নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত আগস্টে ইতালির ল্যামপেদুসা দ্বীপের কাছে দুটি নৌকা ডুবে অন্তত ২৭ জন নিহত হন। এর আগে জুন মাসে লিবিয়ার উপকূলে দুটি নৌকা ডুবির ঘটনায় অন্তত ৬০ জন নিখোঁজ হন।
অধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, লিবিয়ায় অবস্থানরত শরণার্থী ও অভিবাসীরা নানান ধরনের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন—যার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি ও শারীরিক নির্যাতন। এনজিওগুলোর অভিযোগ, রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান ধাপে ধাপে বন্ধ করে দেওয়ায় সমুদ্রপথের যাত্রা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
ইসরাইলের গুলি-বোমা থেকে বাঁচতে পালাচ্ছে হাজারও গাজাবাসী
গাজায় ইসরায়েলের অবিরাম বোমা হামলা, একদিনে নিহত ৯০
গণবিক্ষোভ আতঙ্কে পতনের আশঙ্কায় মোদি সরকার