আদেশ জারিসহ তিনটি শর্ত পূরণ না হলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না বলে জানিয়েছেন দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অবস্থান জানান। সংবাদ সম্মেলনে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য দেন নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেন, “সংস্কার প্রস্তাবের ক্ষেত্রে কিছু দলের কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে, যা স্বাভাবিক। তবে আমাদের মূল দাবি ছিল— এই নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে গণভোট হবে। জনগণ যদি পক্ষে ভোট দেন, তবে জুলাই সনদ অনুমোদিত হবে। এরপর যে সংসদে কনস্টিটিউট পাওয়ার থাকবে, তারা সেই সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কার করবে। পুরো প্রক্রিয়ার ভিত্তি হবে একটি ‘অর্ডার’, যার মাধ্যমে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং পরবর্তী ধাপগুলো এগিয়ে যাবে।”
জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, “ঘোষণাপত্র ঘোষণার আগে আমাদের যে টেক্সট দেখানো হয়েছিল, ঘোষণার সময় সেটি পরিবর্তন করা হয়। আইনি ভিত্তির দাবি থাকলেও তা অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এমনকি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের অনেক দিকই ঘোষণাপত্রে প্রতিফলিত হয়নি, যা আমরা পরে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছি।”
তিনি আরও বলেন, “আইনি ভিত্তি ও আদেশের নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো দলিল স্বাক্ষর করলে তা অর্থহীন হবে। সরকার ভবিষ্যতে কীভাবে আদেশ জারি করবে বা সেখানে কী বার্তা থাকবে, সে বিষয়ে আমরা এখনো কোনো স্পষ্ট নিশ্চয়তা পাইনি। তাই এমন আরেকটি প্রতারণার ঘটনার সাক্ষী হতে চাই না।”
জুলাই সনদের সফল বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে তিনটি নির্দিষ্ট প্রস্তাব তুলে ধরেন নাহিদ ইসলাম। সেগুলো হলো—
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়া স্বাক্ষরের আগে প্রকাশ করতে হবে। এই আদেশ জনগণের সার্বভৌম অভিপ্রায় অনুসারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূস জারি করবেন।
সনদের ৮৪টি বিষয় একসঙ্গে গণভোটে তোলা হবে, যাতে নোট অব ডিসেন্টের আলাদা কোনো কার্যকারিতা না থাকে। গণভোটের প্রশ্নগুলো চূড়ান্ত করে আগেই প্রকাশ করতে হবে।
জনগণ সনদ অনুমোদন করলে, সেই সনদ অনুযায়ী সংবিধান সংস্কারের ক্ষমতা সংসদকে প্রদান করতে হবে এবং নতুন সংবিধান ‘সংবিধান ২০২৬’ নামে পরিচিত হবে।
তিনি জানান, “এই তিনটি বিষয় পরিষ্কারভাবে নির্ধারিত হলে জুলাই সনদে স্বাক্ষর অনুষ্ঠান আয়োজন করা যেতে পারে। তখন আমরা অংশগ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবো। তবে বিষয়গুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সনদে স্বাক্ষর কেবল আনুষ্ঠানিকতা মাত্র— এতে অংশ নেওয়া বা না নেওয়া সমান অর্থহীন। জনগণের সামনে বিষয়গুলো পরিষ্কার না করে স্বাক্ষর আয়োজন করা আসলে এক ধরনের ছলচাতুরি।”
নাহিদ ইসলাম বলেন, “আমরা জনগণকে অন্ধকারে রাখতে চাই না। রাজনৈতিক দল হিসেবেও আমাদের অধিকার রয়েছে জানতে, সরকার কীভাবে সনদ বাস্তবায়ন করতে চায়।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “আগামী ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) কেন্দ্র করে আমাদের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
৫ ঘণ্টায়ও ইপিজেডের আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি, ঝুঁকিতে আশপাশের কারখানা
ডাকসু-জাকসু-চাকসুর প্রতিচ্ছবি জাতি আগামীতেও দেখবে: জামায়াত আমির
চট্টগ্রামে আগুন নেভাতে যোগ দিয়েছে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী