শাহরাস্তি (চাঁদপুর) প্রতিনিধিঃ
শাহরাস্তি উপজেলার বলশিদ মহিলা মডেল আলিম মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন চাঁদপুর জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। বিষয়টি জানাজানি হলে সভাপতির অব্যাহতি দাবি করে কমিটির তিন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। এলাকাবাসীর পক্ষে এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই বিদ্যুৎশাহী সদস্য মনিরুজ্জামান, অভিভাবক সদস্য মো. খোরশেদ আলম ও সদস্য আয়েশা বেগম পদত্যাগ করেছেন। এদিকে বিভিন্ন সুবিধা ভোগ করতে তিন দফা মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। মাদ্রাসাটির যাত্রা কালে নামকরণ করা হয় ফজিলতের নেছা মহিলা মাদ্রাসা।জানা গেছে প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলামের মায়ের নামে মাদ্রাসাটির নামকরণ করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিশেষ সুযোগ সুবিধা ভোগ করতে আমিনুল ইসলাম নামের আগে পরে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদ্রাসা নাম করণ করেন। বর্তমান বলশিদ মডেল মহিলা আলিম মাদ্রাসা নামে নামকরণ হলেও প্রধান ফটকে এখনো শোভা পাচ্ছে শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদ্রাসা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলছে, শিক্ষক মিলনায়তন খোলা থাকলেও উপস্থিত শিক্ষক সংখ্যা ছিল অল্প। মাধ্যমিক লেভেলের শিক্ষক ঝর্না আক্তার বলেন, “ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উপজেলার মিটিংয়ে গেছেন, অফিস সহকারী ছুটিতে। কমিটির ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই। শুনেছি আমার নাম থাকতে পারে, তবে কমিটি আসলেই হয়েছে কিনা আমি জানি না।”
এলাকাবাসীর পক্ষে অভিযোগকারী বাবুল হোসেন পাটোয়ারী বলেন, এই মাদ্রাসাটির নাম তিন দফা পরিবর্তন করা হয়েছে। বর্তমান সভাপতি একজন আওয়ামী লীগ নেতা তিনি জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক। প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে তিনি এ মাদ্রাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন। বিগত কয়েক বছর পূর্বে তিনি আহমেদ নগর আলিম মাদ্রাসায় অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা বলে তিনি অঘোষিত ভাবে দুটি মাদ্রাসার কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। তার স্ত্রী নাজমা বেগম মাদ্রাসার অফিস সহকারী এছাড়াও তার পরিবারের ৫ সদস্য বিভিন্ন পদে চাকুরী করে আসছেন। বাড়িতে বসেই তার স্ত্রী হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোশাররফ হোসেন জানান, “অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে গোপনে এই কমিটি করা হয়েছে। আমি এ বিষয়ে কিছুই জানতাম না।
কমিটির সদস্য খোরশেদ আলম বলেন, “আমার দুই মেয়ে ওই মাদ্রাসায় পড়ে। একদিন অফিসে গিয়ে আমাকে বলা হয় আমি অভিভাবক সদস্য, এখানে স্বাক্ষর করতে হবে। কিছু না বুঝেই স্বাক্ষর করি। পরে জানতে পারি এটি পরিকল্পিত একটি কৌশল। তাই আমি পদত্যাগ পত্র দিয়েছি।
মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, অধ্যক্ষের কক্ষের চাবি সভাপতির কাছ থাকে এবং অফিসের মূল্যবান কাগজপত্র তিনিই সংরক্ষণ করে থাকেন। গত ১৩ আগস্ট কমিটির সভা হয়েছে সেগুলোর রেজুলেশন সভাপতির কাছে রয়েছে। কমিটি গঠন করা হয়েছে তবে সদস্যদের নামের তালিকাও ওনার কাছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজিয়া হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এলাকাবাসী মনে করেন, এই কমিটি অবৈধ ও অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় গঠিত। তারা অভিযোগপত্রের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি গঠনের জোর দাবি জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন
বিএনপি সংখ্যাগরিষ্টতা নিয়েই আগামী সরকার গঠন করবে: বিয়ানীবাজারে ফয়সল চৌধুরী
পাথর চাপায় সিলেটে রায়হান হত্যা মামলা: আত্মসমর্পন করেনি আকবর,দেশ ছাড়ার গুঞ্জন
কমলগঞ্জে পল্লী বিদ্যুতের ভূতুড়ে বিলে দিশেহারা গ্রাহক