December 27, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, December 7th, 2024, 6:15 pm

শীতের শুরুতে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় 

এস এ শফি, সিলেট প্রতিনিধি:
 শীতের শুরুতে সিলেটের পর্যটন স্পট গুলোতে পর্যটকদে ভিড় জমে উঠেছে। এ মৌসুমে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যরে লীলাভুমি সিলেটের পর্যটন স্পট ঘিরে পর্যটকদের আগ্রহ থাকে সারাবছর। এছাড়া যেকোনো ছুঁটিতে সিলেটের দর্শনীয় স্থান গুলোতে ভিড় বাড়ে পর্যটকদের। ব্যতিক্রম নয় এবারও।
বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশের চলমান কূটনৈতিক উত্তেজনার কারণে ভারতে ভ্রমণকারীদের ভিসা দিচ্ছে না ভারত। ভিসা না পাওয়ার কারণে সহজেই যেতে পারছেন না ভ্রমন পিপুসারা। তাই অনেকেই সিলেটকে বেচে নিচ্ছেন। তাই দীর্ঘ দিনের মন্দাভাব থেকে চাঙা হচ্ছে সিলেটের পর্যটন অর্থনীতি। বিশেষ করে সিলেট জেলা সহ বিভিন্ন জেলায় বার্ষিক পরিক্ষা শেষ হতে চলেছে। তাই অনেকে বাচ্চাদের বিনোদন দিতে ছুটে আসছেন সিলেটের সৌন্দর্য্য দেখতে।
সাপ্তাহিক এই ছুটির সময়ে সিলেটে ৫ থেকে ৬ লাখ পর্যটক আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতোমধ্যে সরকারি- বেসরকারি অনেক চাকরিজীবী ছুটি নিয়ে এসেছেন উঁচু টিলা, ঢেউ খেলানো চা বাগান, নীল জলের লালাখাল, পাথুরে বিছানায় ভেসে চলা ঝর্ণার ধারা কিংবা জলের মধ্যে ভেসে ওঠা অরণ্যে সুশোভিত সিলেটের বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। প্রকৃতিকন্যা জাফলং, লালাখাল, সাদাপাথর, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, কুলুমছড়া, পাংথুমাইসহ সকল পর্যন্ট স্পটে এখন উৎসবের আমেজ।
স্থানীয়রা জানান, বছরে ২টা ঈদে পর্যটন খাতের মানুষ গুলো বিপুল প্রত্যাশা নিয়ে বসে থাকে। কিন্তু গত ঈদুল ফিতরে কিছুটা ব্যবসা হলেও ঈদুল আযহার সময় থেকে দফায় দফায় বন্যায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সিলেটের পর্যটন স্পটগুলো। এর আগে ২০২০ সালের করোনা এবং ২০২২ সালের প্রলয়ংকরী বন্যায় দীর্ঘ সময় সিলেটে পর্যটন খাতে স্থবিরতা নেমে আসে।
ছুটির প্রথম ছিল বৃহস্পতিবার সিলেটের সাদাপথর, জাফলং, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, লালাখাল, পান্থুমাই, মায়াবী ঝরনাসহ পর্যটন স্পট সমূহে যে দিকে চোখ যায় শুধু মানুষ আর মানুষ। শুক্রবার এই সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়। সিলেটের অধিকাংশ হোটেল- মোটেলের সব রুম বুকিং। ব্যস্ত সময় পার করছেন পর্যটন এলাকার মাঝি-মাল্লা, ব্যবসায়ী, ফটো গ্রাফারসহ সংশ্লিষ্টরা।
পর্যটকদের আগমন ঘিরে সবগুলো স্পটে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে রোববার এই ৪ দিনে সিলেটে অন্তত ৫ লাখ পর্যটকের ঢল নামার প্রত্যাশায় পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট হোটেল এন্ড গেস্ট হাউস ওনার্স এসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নওশাদ আল মুক্তাদির বলেন, করোনা পরবর্তী সময় থেকে সিলেটের পর্যটন খাতে ভয়াবহ ধস নামে। কোন ভাবেই মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না সিলেটের সম্ভাবনাময় এই খাতটি। করোনা, বন্যা, আন্দোলন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সব মিলিয়ে এই খাতের সংশ্লিষ্টরা কঠিন সময় পার করছে। এবার টানা ৪ দিনের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে। আমরা আশা করছি চলমান শীতের সময়ে  সিলেটে অসংখ্য  পর্যটক আসবেন।
ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন সিলেট এর সেক্রেটারি এস এ শফি জানান, পর্যটন সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে সিলেটের প্রতি সব সময় ভ্রমণ প্রিয়দের নজর থাকে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে ভারতে ভ্রমণ অনেকটা কষ্টসাধ্য বিধায় গোটা সিলেট জুড়ে এখন পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে বিগত দিনের লোকসানটা অনেকটাই কাটিয়ে উঠা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ বলেন, প্রকৃতি বন্যা নামে খ্যাত  সিলেটে এবার  পর্যটকের ঢল নেমেছে। এসব পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।