ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং আরেক আসামির বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিনি জবানবন্দি দেওয়ার কথা রয়েছে। প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে তাকে মামলার শেষ সাক্ষী হিসেবে ধরা হয়েছে।
এর আগে, বুধবার তিনি আংশিক জবানবন্দি দেন। ওইদিন নাহিদ ইসলাম জানান, গত বছরের ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা ও নাতিপুতি’ আখ্যা দিয়ে কোটাপ্রথার পক্ষে বক্তব্য রাখেন। তার দাবি, এই মন্তব্যই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার বৈধতা হিসেবে কাজ করেছিল।
তিনি বলেন, ওই মন্তব্যে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা অপমানিত বোধ করেন এবং সেদিন রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ আরও জানান, ১৫ জুলাই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন যে ছাত্রলীগই আন্দোলন ঠেকাতে যথেষ্ট। পরদিন ১৬ জুলাই দেশব্যাপী বিক্ষোভ চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদসহ ছয়জন নিহত হন।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, ১৭ জুলাই রাতে আন্দোলনের সর্বাত্মক শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয় এবং ১৮ জুলাই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। ওই সময় নেতাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে, অনেকে আত্মগোপনে চলে যান, আর সারা দেশে বহু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ হতাহত হন।
তিনি বলেন, ১৯ জুলাই সরকার গণমাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয়। সেদিনও পুলিশ ও ক্ষমতাসীনদের সশস্ত্র বাহিনী নির্বিচারে গুলি চালায়, অথচ হতাহতদের খবর প্রচার পায়নি কোনো টেলিভিশন চ্যানেল।
এদিন দুপুরে মামলার ৪৬তম সাক্ষী হিসেবে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের জবানবন্দির জেরা শেষ হয়। এর আগে সোমবার ও মঙ্গলবারও তার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও আসামির তালিকায় রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এর মধ্যে আবদুল্লাহ আল-মামুন ইতিমধ্যে ‘অ্যাপ্রুভার’ হিসেবে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবারও তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
জানা গেছে, নাহিদ ইসলামের সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়েই প্রসিকিউশনের সাক্ষী উপস্থাপন প্রক্রিয়া শেষ হবে। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হলে শুনানি কার্যক্রম সমাপ্তির দিকে এগোবে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
পাসপোর্ট ছাড়াই ফ্লাইট পরিচালনা, জেদ্দায় আটক ক্যাপ্টেন মুনতাসির
জেরুজালেমকে কখনো অপবিত্র হতে দেব না: এরদোগান
শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের কেউ ভোট দিতে পারবেন না