নিজস্ব প্রতিবেদক
৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টায় শোভাযাত্রা শুরু করে সন্ধ্যায় সোয়া ৬টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ করে বিএনপি। এদিন রাজধানীর নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শোভাযাত্রার সমাপ্তি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এসময় তিনি অতিদ্রুত নির্বাচনের দাবি জানান।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানকে কেন্দ্র করে ৭ নভেম্বর পালন করে বিএনপি। দলীয়ভাবে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে দলটি। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) কর্মদিবস থাকায় শুক্রবার (৮ নভেম্বর) শোভাযাত্রা করলো বিএনপি।
বিকেলে নয়াপল্টনে কোরআন তেলাওয়াত ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শোভাযাত্রার কার্যক্রম শুরু হয়। অস্থায়ী ট্রাকে স্থাপিত মঞ্চে সভাপতিত্ব করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন তারেক রহমান।
বিকেল সাড়ে ৩টায় নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হওয়া শোভাযাত্রার অগ্রভাগ মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে পৌঁছায় বিকেল পৌনে ৫টায় এবং সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় শোভাযাত্রার শেষভাগ নয়াপল্টন থেকে রওনা করে। নয়াপল্টন থেকে শোভাযাত্রা কাকরাইল মসজিদ, মৎস্যভবন মোড়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, হোটেল ইন্টারকনটিনেন্টাল, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট হয়ে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে গিয়ে শেষ হয়।
উদ্বোধনী বক্তব্যে জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া দম্পতির জেষ্ঠ সন্তান তারেক রহমান বলেন, ‘আজ রাজপথের সমাবেশ, মিছিল কারও বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় তোলার জন্য নয়, আজকের মিছিল দেশের স্বার্থরক্ষার মিছিল।’
বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমি একটি বিষয়ে স্মরণ করিয়ে সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানাতে চাই, আমি নিজেও সতর্ক থাকতে চাই– সেটি হলো গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্র এখনো কিন্তু থেমে নেই। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দিতে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা দেশে-বিদেশে, প্রশাসনে, এখনো সক্রিয়।’
সমাপনী বক্তব্যে মির্জা ফখরুল বিপুল অংশগ্রহণের জন্য নেতাকর্মী ও আগতদের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, ঢাকার আটটি জেলার নেতাকর্মী ও আপামর জনসাধারণ, আপনাদের বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও বিএনপির পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
জাতীয়তাবাদী শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্র কাজে আসবে না
আওয়ামী লীগ দেশের সব রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে: ফখরুল
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজ জাতির স্বাধীনতা রক্ষার জন্য নতুন করে শপথ নিলেন, আজকে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে শপথ নিলেন।’
সকল দলের প্রতি ফখরুল বলেন, ‘সকল রাজনৈতিক দলকে আহ্বান জানাবো, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘অতিদ্রুত সংস্কার করে অবাধ নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সংসদ ও জনগণের সরকার গঠন করতে পারবো।’
বক্তব্য শেষে মির্জা ফখরুল তার দল ও নেতা নিয়ে স্লোগান দেন। ফখরুলের বক্তব্যে যখন শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির ঘোষণা, তখনও শোভাযাত্রা চলছিল। এসময় জাতীয় সংসদের দক্ষিণ গেট এলাকা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিপুল জমায়েতে ভরে ওঠে।
শোভাযাত্রার শেষপর্বে লন্ডন থেকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ভার্চুয়ালি অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও স্থানীয় সময়ে জুমার নামাজে তিনি থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
মির্জা ফখরুলের আগে বক্তব্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকের শোভাযাত্রা প্রমাণ করেছে আমরা সকল বাধা মোকাবিলা করতে পারবো।’
এসময় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির নেতাকর্মীরা জানান, ৭ নভেম্বর উপলক্ষে আজ মূলত শোডাউন করেছে বিএনপি। এই আয়োজনে বিএনপিসহ যুবক, ছাত্র-তরুণদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। নেতাকর্মীদের বিপুল অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা নানা স্লোগানে মুখরিত করে রাখেন পুরো সময়। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নিয়ে বিরতিহীন স্লোগানে মেতেছেন নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের
জান্নাতে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানরা যেভাবে মিলিত হবে
কিশমিশ-মনাক্কায় যত উপকার