নিজস্ব প্রতিবেদক:
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, বেক্সিমকোসহ যেসব কারখানা নিয়ে সমস্যা আছে সেগুলো নিয়ে আমরা কাজ করছি। ৫ জন উপদেষ্টা ও ৪ জন সচিব মিলে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে শ্রম আইনসহ যাবতীয় বিষয়ে কাজ করা হবে। এরই মধ্যে সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশন থেকে আমরা যে প্রস্তাব পাবো তা যথাযথভাবে বাস্তবায়নের চেষ্টা করবো।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ টেক্সটাইল-গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত আজকের গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলোচনায় সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল। তিনি ৮ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ) সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
এসময় এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, আপনাদের যত দাবি আছে তার ২০ শতাংশ বাস্তবায়ন হলেও অনেক কিছু। আমি আজ থেকে ৭৮ দিন আগে এই মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছি। তখন সাভার, গাজীপুরে শ্রমিক আন্দোলনের কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল। আজ সকালেও একটি কারখানার স্টাফদের পদত্যাগের দাবিতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক বন্ধ করেছে শ্রমিকরা। এর ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
আমি যদি যোগদানের পর ফোন দিয়ে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের রাজপথ থেকে কারখানায় ফেরত নিতে পারি তাহলে শ্রমিক নেতারা কেন পারছেন না। তার মানে আপনাদের সঠিক নেতৃত্ব নেই। আমি শ্রমিক নেতাদের আহ্বান করবো আপনারা যাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন তাদের কথা বলেন।
কারখানার মালিকরা ১৮ দফা দাবিতে সই করেছেন। আপনাদের ৮ দফা দাবিতে এমন কিছু নেই যা ১৮ দফায় ছিল না।
শ্রমিকদের রেশনিং নিয়ে শ্রম সচিব বলেন, আমরা পোশাক শ্রমিকদের জন্য টিসিবি থেকে ১০ লাখ কার্ডের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু আজ পর্যন্ত শ্রমিক নেতারা শ্রমিকদের তালিকা দিতে পারেননি। কথা বলার সময় সবাই থাকে কিন্তু বাস্তবায়নের সময় কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।
নিম্নতম মজুরির ব্যাপারে তিনি বলেন, আপনারা শ্রম আইনের এক জায়গায় মানবেন অন্য জায়গায় নিজেদের সুবিধার জন্য মানবেন না এটাতো সঠিক নয়। মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত আছে। আপনারা ৩৫,০০০ টাকার কথা বলেছেন কিন্তু সেটা কতটা বাস্তবসম্মত সেটা আপনারাই বিচার করবেন। ১৮ দফা সই করার পর হঠাৎ মজুরি দ্বিগুণ করার দাবিতে রাস্তা বন্ধ করা যুক্তিসংগত নয়। এর জবাব শ্রমিক নেতাদের দিতে হবে।
শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশে ৭ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিক আছেন যা মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ। তবে তারা সামাজিক সুরক্ষার আওতায় নেই। সামাজিক সুরক্ষা ফান্ডে সরকার টাকা দেয় না, দেয় মালিক পক্ষ। এই তালিকায় বর্তমানে ৪৫০টি কোম্পানি আছে। এটা ৪,৫০০টি হওয়া উচিত।
সরকারের ফান্ডে ১ লাখ কোটি টাকা বিভিন্ন ভাতা বাবদ খরচ হয়। আমি দাবি তুলেছি এই ফান্ডের বড় একটা অংশ যাতে শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা ফান্ডে বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টা শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে যথেষ্ট সচেতন।
অতীতের দায় আমি নিতে চাই না। তবে যত অনিয়ম হয়েছে তা আমরা খতিয়ে দেখছি। শ্রমিকদের কেন্দ্রীয় ফান্ড ব্যবস্থাপনায় যাতে স্বচ্ছতা বজায় থাকে সেই উদ্দেশ্যে এটিকে অটোমেটেড করতে চাচ্ছি।
শ্রম আদালতের মামলাগুলো যাতে বিভিন্ন কোর্টে সমানভাবে বণ্টন করা যায় তাহলে দ্রুত এগুলো নিষ্পত্তি করা সম্ভব।
আরও পড়ুন
পাকিস্তান থেকে সরাসরি আসছে জাহাজ, আমদানি বেড়েছে ২১ শতাংশ
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
ডলারের বাজারে ফের অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা