July 26, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 25th, 2025, 6:07 pm

সখীপু‌রে বিদ‌্যাল‌য়ে অনুপস্থিত থেকেও নিয়মিত বেতন তোলার অ‌ভি‌যোগ শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে

মামুন হায়দার, সখীপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা

টাঙ্গাইলের সখীপুরে সুরীর চালা আব্দুল হামিদ চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিত বেতনভাতা উত্তোলন করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই তারা প্রায় নয় মাস ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন।

জানা গেছে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন ২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে এবং তার স্ত্রী ও সহকারী শিক্ষক হাজেরা খাতুন ওই বছরের ৭ নভেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। অথচ, তারা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের (EFT) মাধ্যমে নিয়মিত বেতন নিচ্ছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষক দম্পতির কেউই হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন না। তাদের অনুপস্থিতির কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন যোগদানের পর থেকেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি নিজের স্ত্রীকে অবৈধভাবে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এসব অনিয়মের প্রতিবাদে এলাকাবাসী একাধিকবার মানববন্ধন, বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। তাদের চাপের মুখে তিনি বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেন।

বিদ্যালয়ের ক‌য়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষক ও তার স্ত্রী বিদ্যালয়ে না থাকায় শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস পাচ্ছে না।

এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন বলেন, “আমরা বিদ্যালয়ে যেতে ইচ্ছুক। কিন্তু বিদ্যালয়ে যাওয়ার মতো উপযুক্ত পরিবেশ নেই। সভাপতির নোটিশের জবাব আমরা দেব।”

বিদ্যালয়ের এডহক কমিটির সভাপতি ও উপজেলা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, “তাদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হারুনুর রশিদ বলেন, “কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দীর্ঘ সময় অনুপস্থিত থাকা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ওই শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের দাবি, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হোক। এলাকাবাসী জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কফিল উদ্দিন ও তার স্ত্রী সহকারী শিক্ষক হাজেরা খাতুন দীর্ঘ প্রায় নয় মাস ধরে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকলেও নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করে চলেছেন—এটি যেন সরকারি অর্থ লুটপাটের এক প্রকাশ্য উদাহরণ।

মামুন হায়দার

সখীপুর ( টাঙ্গাইল ) সংবাদতাতা