জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ওসমান হাদির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ ও ইনকিলাব মঞ্চের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়।
ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, “ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদীকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।”
গত শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওই রাতেই উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে গত সোমবার তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
শরিফ ওসমান হাদি ১৯৯৩ সালে ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা একজন মাদ্রাসা শিক্ষক। পারিবারিক আদর্শ ও নৈতিক শিক্ষাই তার জীবন গঠনে বড় ভূমিকা রাখে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন কনিষ্ঠ।
হাদির শিক্ষাজীবনের শুরু ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী ঝালকাঠি এন এস কামিল মাদ্রাসায়। সেখানে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন তিনি। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় এসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন।
ছাত্রজীবন শেষ করে হাদি শিক্ষকতার মতো মহৎ পেশাকে বেছে নেন। কর্মজীবনের শুরুতে তিনি একটি স্বনামধন্য কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন।
শরিফ ওসমান হাদি এক সন্তানের জনক। পরিবার, শিক্ষকতা ও জ্ঞানচর্চাই ছিল তার জীবনের প্রধান অনুষঙ্গ।
তার আকস্মিক মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গন, শিক্ষক সমাজ ও অসংখ্য অনুসারীর মাঝে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে আসবে ওসমান হাদির মরদেহ
অস্ত্রোপচার শেষে মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ
হাদি ছিলেন বিপ্লবী রক্তে উজ্জীবিত প্রতিবাদের অনন্য প্রতীক: প্রধান উপদেষ্টা