বিগত দিনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে অংশ নেওয়া সমমনা দল ও জোটের আরও ১০ নেতাকে আসন ছাড় দিয়েছে বিএনপি। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এসব আসনে বিএনপি নিজস্ব কোনো প্রার্থী দেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (তারিখ অনুযায়ী) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।
ব্রিফিংয়ে মির্জা ফখরুল জানান—ঢাকা-১৩ আসনে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দলের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। ঢাকা-১২ আসনে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক প্রার্থী হবেন। পটুয়াখালী-৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এবং ঝিনাইদহ-৪ আসনে একই দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান লড়বেন।
এ ছাড়া বগুড়া-২ আসনে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না প্রার্থী হবেন। পিরোজপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি নির্বাচন করবেন। এসব আসনে সমমনা দলগুলোর প্রার্থীদের সমর্থন জানিয়ে বিএনপি দলীয় কোনো প্রার্থী দেবে না।
এদিকে কুমিল্লা-৭ আসনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) মহাসচিব, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ প্রার্থী হবেন। তিনি এরই মধ্যে বিএনপিতে যোগদান করেছেন। নড়াইল-২ আসনে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবেন। যশোর-৫ আসনে ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি রশিদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
বুধবার গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব নেতার বিএনপিতে যোগদান ও সমঝোতার বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়।
তবে সমমনা দল ও জোটকে আসন ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিএনপির মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। একাধিক আসনে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণাও দিয়েছেন। এতে মিত্র দলের নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করলেও বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব বলছে—সবকিছু শেষ পর্যন্ত সমাধান হয়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিএনপির মিত্র হিসেবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, ১১ দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, এলডিপি, বিজেপি, গণঅধিকার পরিষদ, এনডিএম, চারদলীয় বাম জোট, লেবার পার্টিসহ প্রায় ৫৭টি দল ও জোট অংশ নেয়।
গত অক্টোবরে এসব দল ও জোট মোট ২২২টি আসন দাবি করে। এর মধ্যে—এলডিপি চায় ৪০টি, ১২ দলীয় জোট ২১টি, গণফোরাম ১৫টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯টি, বিজেপি ৫টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি ৬টি এবং এনডিএম ১০টি আসন দাবি করে।
এর আগে মঙ্গলবার বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম–এর সঙ্গে চারটি আসনে নির্বাচনী সমঝোতার ঘোষণা দেয়।
সমঝোতা অনুযায়ী— নীলফামারী-১ মাওলানা মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী, নারায়ণগঞ্জ-৪ মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী,
সিলেট-৫ মাওলানা মো. উবায়দুল্লাহ ফারুক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব। এই চার আসনেও বিএনপি নিজস্ব কোনো প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
যেকোনো উসকানির মুখে ধীর ও শান্ত থাকতে দেশবাসীর প্রতি তারেক রহমানের আহ্বান
সোমবার থেকে আমানতের অর্থ ফেরত পাবেন পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকরা
‘তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে সুসংহত করবে’