নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। আর ওই বকেয়া আদায়ে হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, দপ্তর-অধিদপ্তরে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। আর ওই বকেয়া বিল আদায়ে ২০১০ সালের পর থেকে দফায় দফায় আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক, চিঠি চালাচালি হলেও বিল আদায় হয়নি। যদিও সরকার নানা উৎস থেকে অর্থসংস্থান করে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছে। অথচ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে গড়িমসি করছে। বিদ্যুৎ বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারি প্রায় ৫৬টি প্রতিষ্ঠানের কাছে দুই হাজার কোটি টাকা বকেয়া জমা পড়ে আছে। এই হিসাব চলতি বছরের জুন পর্যন্ত। বাকি সময়ে বকেয়ার পরিমাণ আরো বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ বিল বকেয়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের- ৮৫৬ কোটি টাকা; দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ৪৩৫ কোটি, কৃষি মন্ত্রণালয়ের ৬৬ কোটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আড়াই কোটি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ৫০ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। সূত্র জানায়, সরকারি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ে বছরের পর বছর বৈঠক, চিঠি চালাচালি হয়ে আসছে। তা এখন একটা রুটিনওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। যদিও বেসরকারি গ্রাহকদের এক মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকলেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হচ্ছে।
সরকারি বিভিন্ন দপ্তরেও একই কাজ করা প্রয়োজন। কারণ এমনতিইে বিদ্যুৎ খাতের প্রয়োজনীয় অর্থসংস্থান এবং ডলার সংকটের কারণে বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। অর্থ বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দেনদরবার করেও অর্থ ছাড় করাতে পারছে না বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ। অথচ এ অবস্থায়ও খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করছে না।
সূত্র আরো জানায়, সারাদেশে ৬টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। ওই ৬টি বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানি তাদের আওতাধীন সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল পাবে। সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিবের (সমন্বয়) সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বিদ্যুতের বকেয়ার হিসাব তুলে ধরেন।
সাম্প্রতিক বৈঠকে বৈশিক সংকট এবং বিদেশ থেকে জ্বালানি আমদানিতে অর্থ সংকটের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। সংশ্লিষ্টদের বকেয়া আদায়ের তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বিশেষ করে সরকারি মন্ত্রণালয় বা সংস্থা, সিটি করপোরেশনগুলোর বিল আদায়ে চিঠি পাঠানো এবং নিয়মিত মনিটরিং করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার দিনে সৃষ্ট যানজটে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ
মাসুদা ভাট্টির বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রতিবেদন
‘রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আ.লীগের প্রেতাত্মারা এখনো বহাল’