July 29, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, July 28th, 2025, 6:11 pm

সাজিদ মৃত্যুর তদন্তের অগ্রগতি জানতে ইবিতে ফের উত্তাল

oppo_0

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি:

 

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেধাবী শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ’র রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং ক্যাম্পাসে দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১ টা থেকে আল কুরআন বিভাগের আহ্বানে ক্যাম্পাসের বটতলায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। বটতলা থেকে মিছিল বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেন তারা। আগামী মঙ্গলবারের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশের আশ্বাস পেয়ে দুপুর দেড়টায় মাঠ ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে থিওলজি অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন ড. আ.ব.ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, আল কুরআন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাসির উদ্দিন মিঝি, অধ্যাপক ড. মোহা. জালাল উদ্দিন, বিভাগের শিক্ষার্থীরা-সহ সকল ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সাজিদ হত্যার তদন্তের বিষয়ে যে অগ্রগতি হবার কথা ছিল সেটা দৃশ্যমান হয়নি। দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছয় দিন সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু সেটা এখনো প্রকাশ করা হয়নি। তদন্ত কাজের কোন গাফিলতি না করে দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে।’

সাজিদের বন্ধু ইনসান বলেন, ‘প্রশাসন ৬ দিন সময় দিয়েছিলেন, কিন্তু এখনো রিপোর্ট প্রকাশ করেননি। প্রশাসন যদি গড়িমসি করে তাহলে পরবর্তীতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

খেলাফত ছাত্র মজলিসের শাখা সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ বলেন, ‘এতদিন সাজিদ হত্যার তদন্ত ছাড়াও নিরাপদ ক্যাম্পাসের জন্য দাবি পেশ করা হয়েছিল। কিন্তু দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখছি না। যা প্রশাসন ব্যর্থতার প্রমাণ করে দিয়েছে।’

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা সভাপতি ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের পর দ্বিতীয় আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। তবে ৬ দিন সময় দিয়েছিল কিন্তু তা তো হাওয়া মনে করছে প্রশাসন। যদি দ্রুত তদন্ত রিপোর্ট দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে নিয়ম ভেঙে আন্দোলন করা হবে।’

ছাত্র ইউনিয়ন ইবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গালিব বলেন, ‘যে প্রশাসন এতদিন মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারেনি সেই প্রশাসনকে মৃত ঘোষণা করা হবে।’

তালাবায়ে আরাবিয়া ইবি শাখার সভাপতি মাহমুদুল হাসান, ‘এতদিন হয়ে গেল, কেন গড়িমসি করা হচ্ছে? কারা তদন্তে বাঁধা দিচ্ছে তা দেখিয়ে দিন।’

oppo_0

ইসলামী ছাত্রশিবিরের শাখা সভাপতি মুহা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আল কুরআন বিভাগ পরীক্ষা বর্জন করে কর্মসূচি দিয়েছে। সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বের করে দ্রুত সময়ের মধ্যে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন সময় ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছিল কিন্তু কোনো রেসপন্স পাইনি। যদি শিক্ষার্থীদের সেন্টিমেন্ট না বুঝেন বা শিক্ষার্থীদের কাতারে না আসেন এবং আপনারা যদি বিপ্লবী প্রশাসনের ভূমিকা রাখতে না পারেন আল্লাহর ওয়াস্তে নেমে যান।’

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানাচ্ছি- সাজিদ হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত করুন। আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন অব্যাহত রাখবো। যদি হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকে তাহলে এর দায়ভার প্রশাসনকে নিতে হবে। আমাদের জানা আছে, একটা গ্রুপ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবসময় সচেতন থাকবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখা সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, ‘সাজিদ হত্যার ৯ দিন হয়ে গেছে কিন্তু এখনও কোনো ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ করেননি প্রশাসন। জুলাইয়ের পরেও জনগণ বা শিক্ষার্থীদের ম্যানডেট না বুঝেন তাহলে আগের নজিরের ব্যত্যয় হবে না এবং আপনাদের নেমে যেতে বাধ্য করা হবে। দ্রুত রিপোর্ট পেশ করে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন, অন্যথায় পালানোর পথ পাবেন না।’

আল কুরআন বিভাগের অধ্যাপক ড.

জালাল উদ্দিন বলেন, ‘এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ হাজার শিক্ষার্থী আমাদের কাছে আমানত। প্রশাসনকে বলবো- আপনারা ছাত্রদের কাতারে চলে আসুন। তাহলে আপানারা সুন্দর থাকবেন এবং ক্যাম্পাসও সুষ্ঠু থাকবে।’

আল কুরআন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাছির উদ্দিন মিঝি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি- একদল ষড়যন্ত্রকারী সাজিদের লাশ নিয়ে বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করে যাচ্ছে। আমরা প্রশাসনকে চাপ প্রয়োগ করে হলেও প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করাবো ইনশাআল্লাহ। আমি প্রশাসনকে বলব- আপনারা কোনো ধরনের শৈথিল্য দেখালে পরিণত ভয়াবহ হবে।’

 

রুটিন ভিসির দায়িত্বে থাকা প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, ‘তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবস সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ছুটির দিন বাদে ৫ দিন কার্যদিবস পেয়েছে তদন্ত কমিটি। আশা করছি- ভিসেরা রিপোর্ট হাতে পেলে চলতি সপ্তাহের মঙ্গল/বুধবারের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ করতে পারবো।’

 

 

 

রবিউল আলম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়