অনলাইন ডেস্ক:
রমজানে সারাদিন না খেয়ে থাকার পর ইফতারে ঠান্ডা পানি এনে দেয় এক অন্য রকম স্বস্তি। তবে এই সাময়িক স্বস্তি শরীরের জন্য কতটুকু নিরাপদ সে সম্পর্কে জানা নেই অনেকেরই। ইফতারে ঠান্ডা পানি পার করার অভ্যাস একদিকে শরীরকে কিছুটা প্রশান্তি দিলেও, অন্যদিকে এটি নানা ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। চলুন জেনে নেই কেন ইফতারের সময়ে ঠান্ডা পানি খাওয়া আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
হজম প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে
দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কারণে পেট খালি থাকে। এসময় ঠান্ডা পানি পেটে গেলে তা তাপমাত্রা পরিবর্তন ঘটায়, যা হজম প্রক্রিয়াকে বিপর্যস্ত করে ফেলতে পারে। এর ফলে পেটে ব্যথা, গ্যাস এবং অস্বস্তি তৈরি হতে পারে। এছাড়া ঠান্ডা পানির কারণে শ্বাসনালিতে সমস্যা, রক্তনালী সংকুচিত হয়ে যাওয়া ও দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। তাই খেজুর বা সাধারণ তাপমাত্রার পানি দিয়ে ইফতার শুরু করতে পারেন।
শরীরের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা
ইফতারের শুরুতে ঠান্ডা পানি পান করলে শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমে যেতে পারে, ফলে পেটে এবং অন্ত্রের সঞ্চালন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে গরমে ঘরে বা বাইরে কাজ করার পর ঠান্ডা পানি পানের ফলে শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা
যারা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য ইফতারে ঠান্ডা পানি পান হতে পারে বিপজ্জনক। ঠান্ডা পানি পাকস্থলীতে দ্রুত গ্যাস উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়, যা পেটের ভেতরে চাপ সৃষ্টি করে এবং গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা তীব্র করে তোলে। এতে অনিয়মিত হজম, বদহজম এবং পেটব্যথার সমস্যা বৃদ্ধি পায়।
পানিশূন্যতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা
রোজায় দীর্ঘ সময় পানাহার না করার কারণে দেহে পানি শূন্যতা তৈরি হয়। ইফতারে ঠান্ডা পানি পান করলে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া গেলেও শরীরের পানি শূন্যতা নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে। ফলে দেহে প্রয়োজনীয় পরিমাণ পানি শোষিত না হওয়ার কারণে শরীরের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।
শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশির ঝুঁকি
ঠান্ডা পানি গলার ভেতরের রক্তনালীতে সংকোচন সৃষ্টি করে, যার ফলে শ্বাসকষ্ট বা সর্দি-কাশির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে যারা শ্বাসকষ্ট বা অ্যালার্জির সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য ঠান্ডা পানি পান আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।
পরামর্শ
সাময়িক স্বস্তির কথা চিন্তা না করে সবার সুস্থ থাকার প্রতি নজর দেওয়া উচিত। ইফতারে ঠান্ডা পানি এড়িয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি পান করা উচিত। ঠান্ডা পানির পরিবর্তে লেবুর পানির মতো স্বাস্থ্যকর পানীয় পান করতে পারেন। যা আপনাকে স্বস্তির পাশাপাশি সতেজ থাকতে সহায়তা করবে। এছাড়া, ইফতারে অল্প অল্প করে পানি পান করা উচিত। যেন শরীর ধীরে ধীরে প্রাকৃতিক তাপমাত্রায় ফিরে আসে। এতে শরীরের সঠিক কার্যক্ষমতা বজায় থাকবে এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি কমবে।
আরও পড়ুন
১২ বছর পর প্রকাশ্যে হিল্লোল-নওশীনের বিয়ের ছবি
অনিচ্ছায় বমি হলে রোজা ভেঙে যায় কি?
মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক পাচ্ছেন বুয়েটের আবরার ফাহাদ