November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, June 1st, 2023, 9:17 pm

সামরিক বাহিনী থেকে পালাচ্ছে মিয়ানমারের সেনারা

অনলাইন ডেস্ক :

মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ছেড়ে লোকজন চলে যাচ্ছে এবং এই বাহিনীর জন্য নতুন সেনা নিয়োগ দেওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে। সেনাবাহিনী ত্যাগ করে চলে আসা সেনারা বিবিসিকে বলছেন দু’বছর আগে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেওয়া সামরিক জান্তা বর্তমানে গণতন্ত্রপন্থী সশস্ত্র আন্দোলন দমন করতে হিমশিম খাচ্ছে। “কেউ সামরিক বাহিনীতে যোগ দিতে চায় না। তাদের নিষ্ঠুরতা এবং অন্যায় কর্মকা-কে লোকেরা ঘৃণা করে,” বলেন নে অং। প্রথমবার তিনি যখন তার ঘাঁটি থেকে পালানোর চেষ্টা করেন, সেসময় তাকে রাইফেলের বাট দিয়ে মারাত্মকভাবে পেটানো হয়। তাকে বলা হয় “বিশ্বাসঘাতক।”

দ্বতীয়বারের চেষ্টায় তিনি পালিয়ে যেতে সক্ষম হন এবং বিরোধী গ্রুপগুলোর সহযোগিতায় সীমান্ত পার হয়ে চলে যান থাইল্যান্ডে। তিনি আরও বলেন, “প্রতিরোধ বাহিনীতে আমার একজন বন্ধু আছে। আমি তাকে ফোন করলাম এবং সে থাইল্যান্ডের লোকজনকে আমার কথা বলল। তাদের সাহায্য নিয়ে আমি এখানে এসে পৌঁছাই”। এখন সে আরো ১০০ জন সেনা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সাথে গোপন একটি বাড়িতে থাকে যারা সম্প্রতি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ছেড়ে পালিয়ে এসেছে। এই সেনারা, যারা তাদের নিজেদের দেশের লোকজনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, তারা আত্মগোপন করে আছে। একারণে তাদের আসল নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যারা প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলেছে তারাই তাদেরকে আশ্রয় ও নিরাপত্তা দিচ্ছে।

সেনা ও পুলিশের পক্ষত্যাগ
নির্বাসিত জাতীয় ঐক্যের সরকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে সামরিক বাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেওয়ার পর থেকে ১৩ হাজার সৈন্য ও পুলিশ তাদের বাহিনী ছেড়ে পালিয়ে গেছে। আরো সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তা যাতে পক্ষ বদল করে সেজন্য নির্বাসিত সরকার নগদ অর্থ এবং আরো কিছু সুযোগ সুবিধা দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। থাইল্যান্ডের নিরাপদ আশ্রয়ে যারা অবস্থান করছে তাদের একজন ১৯ বছর বয়সী মং সেইন। সেখানে তিনি সর্বকনিষ্ঠ। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। মং সেইন বলেন, “আমি সামরিক বাহিনীর ভক্ত ছিলাম”। তিনি ভেবেছিলেন এই বাহিনীতে যোগ দিলে তার পরিবার গর্বিত হবে। তবে গণতন্ত্রকামী আন্দোলন দমনে সেনাবাহিনী যেভাবে সহিংস হয়ে উঠল, তাতে সৈন্যদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি নাটকীয়ভাবে বদলে গেল। তিনি আরও বলেন, “অনলাইনে দেখলাম লোকজন আমাদের ‘সামরিক কুকুর’ বলছে,”। মিয়ানমারে কাউকে এই প্রাণীর নাম ধরে ডাকা অপমানজনক। “এতে আমার খুব খারাপ লাগল।” মং সেইন বলেন, “উপরের মহল থেকে বেসামরিক লোকজনকে হত্যা ও গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার যে নির্দেশ দেওয়া হতো” তার মতো একজন সৈন্যের সেসব অমান্য করার কোনো উপায় ছিল না। তিনি মনে করেন সামরিক বাহিনীর অবস্থান এখন দুর্বল এবং তিনি যে সেখান থেকে চলে এসেছেন এটাও তার একটা কারণ।বিবিসি