নিজস্ব প্রতিবেদক:
পুলিশি হয়রানির অভিযোগ করে তা বন্ধসহ ছয় দফা দাবিতে আজ মঙ্গলবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে অ্যাপ-বেইজড ড্রাইভারস ইউনিয়ন অব বাংলাদেশ (ডিআরডিইউ)। সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিআরডিইউ’র সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদএ তথ্য জানান। বেলাল আহমেদ বলেন, বাড্ডার ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। হয়রানির জন্য একজন চালক তার মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। এ ধরনের ঘটনাও যদি পুলিশকে নাড়া না দেয়, তাহলে কি আত্মহুতি দিলে তাদের বিবেক নাড়া দেবে? তিনি বলেন, গাড়ি কোথাও ব্রেক করলেই সেখানেই ধরে ফেলে ট্রাফিক পুলিশ। সরকার আমাদের জায়গা নির্ধারণ করে দিক। তাহলে আমরা যত্রতত্র দাঁড়াবো না। আমাদের শহর অনুযায়ী যতটুকু জায়গা দেওয়া যায় ততটুকু দেওয়া হোক। যদি ১০টা স্পট দেওয়া হয়, আমরা সেই ১০টাতেই দাঁড়াবো। ডিআরডিইউ সাধারণ সম্পাদক বলেন, সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আমরা কয়েক দফা জানিয়েছি, কিন্তু কোনও প্রতিষ্ঠান আমাদের গ্রহণ করেনি। আমরা ষষ্ঠবারের মতো আন্দোলনে যাচ্ছি। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবো। কোনও ভায়োলেন্সে বিশ্বাসী না। ছয় দফা দাবি হলোÑ
১. অ্যাপস-নির্ভর শ্রমিকদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি দিন, কর্ম ও সময়ের মূল্য দিন।
২. সব ধরনের রাইডে কমিশন ১০ শতাংশ নির্ধারণ করুন, মিথ্যা অজুহাতে কর্মহীন করা থেকে বিরত থাকুন।
৩. ঢাকা চট্টগ্রাম ও সিলেটে রাইড শেয়ারিংয়ের যানবাহন দাঁড়ানোর জায়গা করে দিন।
৪. সব ধরনের পুলিশি হয়রানি বন্ধ করুন।
৫. এনলিস্টকৃত রাইড শেয়ারকারী যানবাহনগুলোকে গণপরিবহনের আওতায় অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি) মুক্ত রাখুন।
৬. গতবছর গ্রহণ করা সব এআইটি এনলিস্টকৃত যানবাহন মালিকদের ফিরিয়ে দিন।
পুলিশের অভিযোগ রয়েছে, রাইড শেয়ার চালকরা রাজধানীর বিভিন্ন সড়কের মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে থাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিআরডিইউ এর সাধারণ সম্পাদক বেলাল আহমেদ বলেন, ‘আমরা কোনও মোড়ে দাঁড়াতে চাই না, আমরা কোথায় দাঁড়াবো, আমাদের নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হোক। তাহলে সেখানেই দাঁড়াবো। পুলিশ কী ধরনের হয়রানি করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাড়ির কোনও ছোট্ট অংশেও যদি ড্যামেজ পায় তাহলেও মামলা দেয়। গাড়ি কোথাও দাঁড়িলে মামলা দেয়। কোথাও ব্রেক করলে সেখানেই ধরে ফেলে। এটা থেকে আমরা মুক্তি চাই। তাদের এই আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে সম্মিলিত রাইডারস অব চট্টগ্রাম (সিআরসি) ও কোথায় যাবেন রাইড শেয়ারিং গ্রুপ (কেআরজিএস)। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২৮ সেপ্টেম্বর ২৪ ঘণ্টা সারাবিশ্বের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আধুনিক মুনাফাখোর কোম্পানির অ্যাপ বন্ধ রেখে জানিয়ে দিতে চেই, ‘আমরা ছাড়া তোমরা অচল’। এর আগে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাড্ডা লিংক রোড এলাকায় রাইড শেয়ারিং অ্যাপস পাঠাওয়ের শওকত আলম সোহেল নামে এক মোটরসাইকেল চালক ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে নিজের মোটরসাইকেলে আগুন দেন। পরে ওই চালককে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি যেখানে ঘটেছে সেখানে আগে থেকেই ট্রাফিক সদস্যদের বলা ছিল কোনও মোটরসাইকেল সকালবেলা সেখানে দাঁড়াবে না। ঘটনাস্থলে রাইড শেয়ারিংয়ের একটি মোটরসাইকেল দাঁড়ালে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা তার কাছে কাগজপত্র দেখতে চান। কিন্তু মোটরসাইকেল চালক কাগজপত্র না দেখিয়ে উল্টো রেগে নিজের বাইকে নিজেই আগুন ধরিয়ে দেন। মোটরসাইকেল চালকের বিরুদ্ধে কোনও মামলা দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলা দেওয়া হয়নি। তার কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করার সময় তিনি নিজেই ওই আগুন ধরিয়ে দেন।
আরও পড়ুন
দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার আহ্বান
হাসিনাকে ভারত ফেরত দেবে না বলে শুনতে পাচ্ছি: মাহফুজ আলম
আমরা চাই, ঘোষণাপত্রে মুজিববাদী সংবিধান কবরস্থ ঘোষণা করা হবে: হাসনাত আবদুল্লাহ