July 1, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 30th, 2025, 8:29 pm

সিলেটে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে নিখোঁজ কলেজছাত্রী

সিলেট অফিস :
সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলায় একই গ্রামে বান্ধবীর বাড়িতে গিয়ে এক তরুণী নিখোঁজের প্রায় সাড়ে তিন মাসেও কোনো হদিস মেলেনি। ওই তরুণীর নাম হাবিবা জান্নাত তামান্না। তাকে গুম করা হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন তার পরিবারের সদস্যরা। রহস্যজনক এ নিখোঁজের ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজানা গ্রামে।

সোমবার (৩০ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ উজ্জামান।

জানা যায়, নিখোঁজ হাবিবা জান্নাত তামান্না উপজেলা কুড়ারবাজার ইউনিয়নের উত্তর আকাখাজানা গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর মৃত নিজাম উদ্দিনের মেয়ে।

গত ২৬ জুন নিখোঁজ তামান্নার বান্ধবী তাছলিমা জান্নাত নামের এক প্রতিবেশী তরুণীসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে বিয়ানীবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন নিখোঁজ কলেজছাত্রীর বড় বোন রাহেলা আক্তার।

তার অভিযোগ, আমার বোনকে তাছলিমা জান্নাত নিজের মা ও ভাইয়ের সহযোগিতায় গুম করে লুকিয়ে রেখেছে।

নিখোঁজ হাবিবা জান্নাত তামান্নার স্বজনরা জানান, একই মাদরাসায় দাখিল পড়াকালীন হাবিবা জান্নাত তামান্নার সঙ্গে উত্তর আকাখাজানা গ্রামের কুয়েত প্রবাসী আব্দুল বাছিতের মেয়ে তাছলিমা জান্নাতের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দুই বান্ধবীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় প্রায়ই দুজনেরই উভয় বাড়িতে যাওয়া-আসা করতো। এমনকি একে অন্যের বাড়িতে রাতযাপনও ছিল স্বাভাবিক ঘটনা।

স্বজনরা আরও জানান, গত ২২ জানুয়ারি সকালে অন্যান্য দিনের মতোই তাছলিমা জান্নাতের বাড়িতে যায় হাবিবা জান্নাত তামান্না। এরপর তাছলিমার মা হাবিবার ভাই হায়াত আহমদকে মুঠোফোনে হাবিবাকে তাদের বাড়িতে কিছুদিন রাখতে চাওয়ার অনুরোধ করলে তিনি তা মানেননি। পরে ১৪ মার্চ রাত পর্যন্ত হাবিবার সঙ্গে তার ভাই-বোনের মুঠোফোনে যোগাযোগ থাকলেও পরদিন ১৫ মার্চ থেকে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। দু-এক দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও যখন হাবিবা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ না করায় স্বজনদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ে।

পরে তারা ছুটে যান তাছলিমাদের বাড়িতে। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন, কাউকে কোনো কিছু না জানিয়ে তাছলিমা ও তার মা, ভাই-বোন অন্য কোথাও চলে গেছেন। কিন্তু কোথায় গেছেন, কেউই জানে না।

হাবিবা জান্নাত তামান্নার বড় বোন রাহেলা আক্তার বলেন, গত ২২ জানুয়ারি সকালে তাছলিমার ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে হাবিবা আর ফেরেনি। আমার বোনকে উদ্ধারের জন্য এলাকায় নালিশ করেও লাভ হয়নি। এমনকি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে বিচারপ্রার্থী হওয়ায় গ্রামের মানুষের নানা রকম মন্তব্যের শিকার হতে হয়েছে। থানায় আসতে চাইলে অনেকেই মামলা-মোকদ্দমায় গেলে ফেঁসে যাবে এবং অনেক টাকা-পয়সার লাগবে বলে নিরুৎসাহিত করতো। উপায় না পেয়ে বোনের খোঁজ পেতে বিয়ানীবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি।

কুড়ারবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন, নানাভাবে চেষ্টা করেও যখন আমরা হাবিবার সন্ধান পেতে ব্যর্থ হই, তখন ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনি সহায়তা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।

বিয়ানীবাজার থানার (এসআই) আল আমিন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর থেকে আমরা ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। অভিযুক্তদের মুঠোফোন নম্বরগুলো সংগ্রহ করেছি। অভিযুক্তদের অবস্থান শনাক্ত করতে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা নিচ্ছি। কারণ তাদের অবস্থান শনাক্ত করতে পারলেই মূল রহস্য উন্মোচিত হবে।

এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ উজ্জামান বলেন, আমরা নিখোঁজ হাবিবা জান্নাত তামান্নার পরিবারের পক্ষ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটির বিষয়ে তদন্ত চলছে।