এস এ শফি, সিলেট: সিলেটে এক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর বাসা ও জায়গা দখলের পায়তারা চলছে, এমন ঘটনায় সিলেট পুলিশের রেঞ্জ ডিআইজি বরাবরে অভিযোগ প্রদান করা হয়েছে। গত ১৪ মে ওই প্রবাসীর পক্ষে তার খালাতো ভাই আওলাদ এ অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়,যুক্তরাজ্য প্রবাসী মোহাম্মদ কামাল আহমদ ২০১৯ সালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯নং ওয়ার্ডের বাগবাড়ি মৌজায় ৭ শতক জায়গা খারিদ করেন। পরে এই জায়গার উপর ঘর নির্মাণ,সীমানা দেয়াল,গেট ইত্যাদির আধুনিকায়ন করেন তিনি। বাড়ির প্রধান ফটকে ওসমানীনগর হাউস নাম দিয়ে নেম প্লেট স্থাপন করেন। সত্ত্বাধিকারী হিসেবে কামাল আহমদ ও তাহার ছেলেদের নাম লেখা হয়। বাসার নম্বর ৪৭/৪,নরসিং টিলা বাগবাড়ি সিলেট।
বাংলাদেশে পরিবার নিয়ে আসলে ওই বাসাতেই বসবাস করেন প্রবাসী কামাল আহমদ। কিন্ত ২০২৪ সালের জুন মাসে সুনামগঞ্জ জগন্নাথপুর উপজেলার মোছাম্মাৎ হাসনা বেগম ও তাঁর স্বামী মুহিবুর রহমান কে বাসাটি মাসিক ১২ হাজার টাকায় ভাড়া প্রদান করেন কামাল আহমদ। এরপর মুহিবুর রহমান বিদেশ চলে যাওয়ায় বর্তমানে হাসনা বেগম বাসায় বসবাস করছেন। প্রথম দিকে কয়েক মাস বাসা ভাড়া দিলেও গত কয়েক মাস থেকে ভাড়া প্রদান থেকে বিরত রয়েছেন। মালিক পক্ষ ভাড়া চাইতে গেলে উল্টো ৩৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। টাকা না দিলে বাসা ছাড়বেনা বলে হুমকি দিচ্ছেন ভাড়াটিয়ারা। অথচ প্রথমদিকে তারা ভাড়া নিয়মিত পরিশোধ করলেও গত ৭ মাস থেকে তারা ভাড়া প্রদান থেকে বিরত রয়েছেন। বর্তমানে বাসা ভাড়া বাবদ হাসনা বেগমের কাছে ৮৪ হাজার টাকা পাওনা জমা হয়েছে। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, মালিক পক্ষ থেকে তাদেরকে পাওনা পরিশোধ ও বাসা ছেড়ে দেয়ার নোটিশ প্রদান করা হলে বিগত সময়ে নানা টালবাহানায় সময় ক্ষেপন করেন দখলদার ভাড়াটিয়ারা। বাসা ছাড়া ও পাওনা টাকা চাইতে গেলে হাসনা বেগম বেপরোয়া আচরন করেন লেডি সন্ত্রাসী হাসনা। এছাড়া সহানীয় স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা কামরুজ্জামান দিপুও এই মহিলার সহযোগী ভূমিকায় নেমে চাঁদা প্রদানের জন্য
হুমকি প্রদান করছেন । অভিযোগকারী উল্লেখ করেন, যুক্তরাজ্য প্রবাসী কামাল আহমদ কয়েক যুগ ধরে বিলেতে অবস্থান করলেও তিনি বাংলাদেশে ব্যাপক বিনিয়োগের মাধ্যমে স্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। এছাড়া সিলেটের কানাইঘাট,জইন্তাপুর,গোয়াইনঘাট ও কোম্পানিগঞ্জে তার রয়েছে শত শত বিঘা জায়গা জমি। ওই জায়গাগুলোতে রয়েছে পাথর,বালি ও বনাঞ্চল। দলিল সম্পাদন করে কেনা ওই সম্পদ গ্রাস করার লক্ষ্যে একটি কুচক্রি মহল তার বিরুদ্ধে নানা চক্রান্ত শুরু করেছে। ওই চক্র কামাল আহমদকে আওয়ামীলীগের লোক বানিয়ে প্রচার চালানোর হুমকিও ইতিমধ্যে প্রদান করেছে। নাম প্রকাশ না করে যুক্তরাজ্য বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার ইন্ধনে কামাল আহমদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগে জানানো হয়।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী কামাল আহমদ জানান, চলতি বছরের জানুয়ারীতে বাংলাদেশে এসেছিলেন তিনি। ব্যবসার কাজে দেশে এক মাস অবস্থান করে ফের লন্ডন চলে যান তিনি। ওই সময় সিলেটের ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়ে মনোমালিন্য দেখা দেয় যুক্তরাজ্য বিএনপির এক প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে। তিনি বলেন,কানাইঘাট ও জাফলংয়ে তার কেনা জায়গায় মাটির নিচে বিপুল পাথরের সন্ধান পাওয়া যায়। বিএনপি নেতা তাকে জানান, তুমি আমাকে তোমার ব্যবসায় অংশীধার বানাও আমি তোমাকে সব ধরণের সাহায্য সহযোগিতা করবো। সরল মনে তিনি ওই নেতার কথায় রাজী হয়ে যান।আলোচনা অনুযায়ী বিএনপির ওই নেতার বড় ভাইয়ের সঙ্গে লিখিত চুক্তিনামা সম্পাদন করে ব্যবসার অংশীধার নিযুক্ত করেন। অংশীধার হয়ে বিএনপির ওই নেতার ভাই আমাকে না জানিয়ে রাতের আধারে আমার জায়গা থেকে শত শত ট্রাক পাথর উত্তোলন করে বিক্রি শুরু করেন। খবর পেয়ে আমি ওই নেতাকে ফোন করে বিষয়টি জানতে চাই। তিনি বলেন, এখন পাথর উত্তোলন নিষিদ্ধ কিন্ত আমাদের জন্য নিষিদ্ধ নয়,আমরা যা বলবো পুলিশ তা করতে বাধ্য। বিষয়টি আমি দেখছি বলে তিনি ফোন লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে এ নিয়ে তার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। তিনি বাধ্য হয়ে তার জায়গায় প্রবেশ না করতে নিষেধ করে দেন ওই নেতার ভাইকে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন বিএনপির ওই নেতা। তিনি কামাল আহমদকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। তাকে আওয়ামীলীগের লোক বানিয়ে প্রচার চালিয়ে চরম প্রতিশোধ নেবেন বলেও হুমকি প্রদান করেন।
কামাল আহমদ আরও জানান, সিলেটের দুইজন পুলিশ কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে অন্যায় আচরণ করছেন। এখন আমি কারো নাম উল্লেখ করিনি কিন্তু তাদের অন্যায় আবদার অব্যাহত থাকলে আমি অভিযুক্তদের নাম উল্লেখ করে উপযুক্ত প্রমাণসহ সংবাদ সম্মেলন করে সবাইকে জানিয়ে দেব। একজন প্রবাসী হিসেবে সবার সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
সিলেট মেরিন একাডেমিতে গ্রিন শিপ রিসাইক্লিং ও ওয়েষ্ট ম্যানেজমেন্ট বিষয়ক সেমিনার
১৫ বছর পর নিজ এলাকায় ফিরলেন সাবেক ছাত্রদল নেতা শেখ মো: আতিকুর
জয়পুরহাটে ক্ষুদ্র উদ্যোগে প্রক্রিয়াজাত মৎস্যপন্য উৎপাদন ও বাজারজাতকরণ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয় সভা