জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :
সিলেটের পর্যটন ক্ষেত্রে একের পর এক সংযোজিত হচ্ছে নতুন আকর্ষন। এবার সুরমা নদীতে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ধরনের নৌকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নদী ভ্রমন করে নগর ঘুরে দেখার এ যেন এক ভিন্ন মাত্রার সংযোজন । এটি বাস্তবায়ন করেছে সিলেট পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতি। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকে নান্দনিক এ ট্যুরিস্ট নৌকা দিয়ে শুরু হয়েছে যাত্রা।
পর্যটকদের নির্মল আনন্দ দিতে খরস্রোতা সুরমায় নান্দনিক কয়েকটি নৌযানের মাধ্যমে সুরাম রিভার ট্যুরিজমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম।
প্রকৃতিকন্যা সিলেটে রয়েছে পর্যটনের অপার সম্ভাবনা। রিভার ট্যুরিজম বা নৌ পর্যটন এখানে দারুণ সম্ভাবনাময় একটি খাত। যা সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভিন্নমাত্রা এনে দিতে পারে। এমন সম্ভাবনা থেকে সুরমা নদীতে ছোট ছোট নৌযান দিয়ে পর্যটকদের নৌ ভ্রমণের সুযোগ করে দিবে।
সিলেট পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতির সভাপতি হুমায়ুন কবির লিটন জানান, মূলত রিভার ট্যুরিজমকে পর্যটনের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে এই উদ্যোগ। সিলেটের জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় চারটি নৌকা দিয়ে যাত্রা শুরু করেছে সুরমা রিভার ট্যুরিজম।
তিনি জানান, সুরমার দুই তীরে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান রয়েছে। পর্যটকদের পরিবেশ বান্ধব দৃষ্টিনন্দন ছোট নৌকা দিয়ে সেই স্পটগুলো ঘুরে দেখানো হবে। যেমন- শাহজালাল (রহ:) যে সিঁড়ি দিয়ে সুরমা নদী পার হয়েছিলেন ঐতিহ্যবাহী সেই সিঁড়ি বা গেইটসহ নদীর পাড়ের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে পারবেন ভ্রমণকারীরা। বিশেষ করে শেখ হাসিনা শিশু পার্ক সুরমা নদীর তীরেই অবস্থিত। কর্তৃপক্ষ যদি পিছনের গেইট দিয়ে দর্শনার্থী প্রবেশের সুযোগ দেয়, তাহলে পর্যটকরা একসাথে নৌ ভ্রমণ ও পার্ক এর সৌন্দর্য্য উপভোগ করার সুযোগ পাবে। এ ব্যপারে পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। তবে নৌ ভ্রমণ করতে হলে বাধ্যতামূলক লাইফ জ্যাকেট পরতে হবে।
‘সিলেট পর্যটন শিল্প সমবায় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম মিয়া জানান, সমিতির সদস্যদের ক্ষুদ্র বিনিয়োগের মাধ্যমে রিভার ট্যুরিজমের যাত্রা। চারটি নৌকা নিয়ে যাত্রা শুরু। ঐতিহ্যবাহী কিনব্রিজের চাঁদনী ঘাট থেকে সুরমা রিভার ট্যুরিজমের নৌকাগুলো চলাচল করবে। আপাতত প্রতিদিন ২টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নৌকাগুলো পরিচালনা করা হবে। পরবর্তীতে পর্যটকদের চাহিদার উপর নির্ভর করবে সময় বৃদ্ধি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম বলেন, সিলেটের পর্যটন শিল্পে সুরমা রিভার ট্যুরিজম নতুন এবং চমকপ্রদ একটি সংযোজন। পর্যটনে অপার সম্ভাবনাময় এই শহরে প্রতি সপ্তাহে ৫০-৬০ হাজার পর্যটক বেড়াতে আসেন। এত পর্যটকের আগমণ আমাদেরকে প্রাণিত করে, এখানে ট্যুরিজম নৌবহর গড়ে ওঠা সম্ভব। কিন্তু আমাদের উপলব্ধির অভাবে সুরমা নদী নাব্যতা হারিয়েছে, পানি দূষিত হচ্ছে। তাই সম্মিলিতভাবে সবার সচেতনতা আমাদের শহরকে সুন্দর এবং শ্রীবৃদ্ধি করতে পারে। বিশ্বের অনেক জায়গায় নদীর পাড়েই সভ্যতা গড়ে উঠেছে এবং সিলেটও গড়ে উঠেছে সুরমা নদীর পাড়েই।
আরও পড়ুন
রেকর্ড গড়া ঝাঁপ থেকে সর্বোচ্চসংখ্যক বাংলাদেশির অ্যান্টার্কটিকা সফর, আছে আরও যত ঘটনা
ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা কুষ্টিয়ায় নেই পর্যটকের ভিড়
জাফলংয়ে নৈশপ্রহরীর নামে বছরে সোয়া কোটি টাকার চাঁদাবাজি