জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
ভারতের সীমান্তঘেঁষা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সুনছড়া চা-বাগানে জীর্ণ টিনের ঘরে চলছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দার এই বাগানে ছোট একটি টিলার উপর দাঁড়িয়ে থাকা জরাজীর্ণ ঘরে, বাঁশ দিয়ে বিভক্ত দুটি ছোট কক্ষে চলছে শিশুদের পাঠদান। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা ১৯৪০ সালে হলেও কাগজে-কলমে ১৯৮০ সাল লেখা।
শিশুদের পোশাকের মতোই স্কুল ভবনের অবস্থাও নাজুক। শিক্ষক আছেন মাত্র ৩ জন, আর শিক্ষার্থী ১৯২ জন। সহকারী শিক্ষক মিটুন কুর্মী জানান, একজন চা-শ্রমিকের সমান দিনে ১৭৮ টাকা মজুরি পাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ মাসে পান মাত্র ১২০০ টাকা সম্মানী।
চা-শ্রমিকদের অভিযোগ, যুগের পর যুগ তারা ও তাদের সন্তানরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান—সব ক্ষেত্রেই থেকে যাচ্ছে অবহেলা। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, বহুবার স্মারকলিপি ও আন্দোলন করেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।
জেলায় ৬৯টি চা-বাগান এলাকায় স্কুল থাকলেও নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্র, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা। সরকার কেবল পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে; বাকি সবই অনুন্নত।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন, এসব বিদ্যালয় সরকারীকরণ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। পার্বত্য এলাকার মতো এখানেও সরকারি করার সুযোগ আছে।
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশ্রাফুল করিম বলেন, ১৯৭৭ সালের আইনে প্রতিটি চা-বাগানে একটি স্কুল থাকা বাধ্যতামূলক হলেও বাস্তবে তা নেই। সরকার যদি বৈষম্যবিরোধী নীতিতে বিশ্বাস করে, তাহলে শতবর্ষের এই বৈষম্য দূর করতে অবশ্যই এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন
ঋণ নয়, অনুদান চাই: সিলেটে সাইকেল র্যালিতে জলবায়ু অর্থায়নের দাবি
গোলাপগঞ্জে লেকভিউ গার্ডেন পরিদর্শনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব
গঙ্গাচড়ায় তিন দিনব্যাপী কৃষি মেলার সমাপনী অনুষ্ঠিত