June 29, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, June 28th, 2025, 7:53 pm

সুনছড়া চা-বাগানের জরাজীর্ণ ঘরে চলছে পাঠদান, বঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার করুণ চিত্র

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

ভারতের সীমান্তঘেঁষা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার সুনছড়া চা-বাগানে জীর্ণ টিনের ঘরে চলছে প্রাথমিক শিক্ষা কার্যক্রম। প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দার এই বাগানে ছোট একটি টিলার উপর দাঁড়িয়ে থাকা জরাজীর্ণ ঘরে, বাঁশ দিয়ে বিভক্ত দুটি ছোট কক্ষে চলছে শিশুদের পাঠদান। বিদ্যালয়টির প্রতিষ্ঠা ১৯৪০ সালে হলেও কাগজে-কলমে ১৯৮০ সাল লেখা।

শিশুদের পোশাকের মতোই স্কুল ভবনের অবস্থাও নাজুক। শিক্ষক আছেন মাত্র ৩ জন, আর শিক্ষার্থী ১৯২ জন। সহকারী শিক্ষক মিটুন কুর্মী জানান, একজন চা-শ্রমিকের সমান দিনে ১৭৮ টাকা মজুরি পাচ্ছেন তারা। কেউ কেউ মাসে পান মাত্র ১২০০ টাকা সম্মানী।

চা-শ্রমিকদের অভিযোগ, যুগের পর যুগ তারা ও তাদের সন্তানরা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান—সব ক্ষেত্রেই থেকে যাচ্ছে অবহেলা। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, বহুবার স্মারকলিপি ও আন্দোলন করেও তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি।

জেলায় ৬৯টি চা-বাগান এলাকায় স্কুল থাকলেও নেই পর্যাপ্ত শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, আসবাবপত্র, সুপেয় পানি ও স্যানিটেশন সুবিধা। সরকার কেবল পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে; বাকি সবই অনুন্নত।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সফিউল আলম বলেন, এসব বিদ্যালয় সরকারীকরণ সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভরশীল। পার্বত্য এলাকার মতো এখানেও সরকারি করার সুযোগ আছে।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আশ্রাফুল করিম বলেন, ১৯৭৭ সালের আইনে প্রতিটি চা-বাগানে একটি স্কুল থাকা বাধ্যতামূলক হলেও বাস্তবে তা নেই। সরকার যদি বৈষম্যবিরোধী নীতিতে বিশ্বাস করে, তাহলে শতবর্ষের এই বৈষম্য দূর করতে অবশ্যই এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।