অনলাইন ডেস্ক
রমজানের শেষ দশ দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল ইতেকাফ করা অর্থাৎ সওয়াবের নিয়তে দুনিয়াবি কাজকর্ম থেকে অবসর নিয়ে কোনো মসজিদে অবস্থান করা। রমজানের শেষ দশ দিনের এই ইতেকাফ শরিয়তে সুন্নতে মুআক্কাদা কেফায়া। কোনো মহল্লা বা এলাকা থেকে একজন ইতেকাফ করলে পুরো মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে এটি আদায় হয়ে যাবে। কেউ ইতেকাফ না করলে সবাই গুনাহগার হবে। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করতেন। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আয়েশা (রা.) বলেন, নবিজি (সা.) মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত রমজানের শেষ দশ দিন ইতেকাফ করেছেন। এরপর তার স্ত্রীগণও (তার সুন্নত অনুসরণ করে রমজানের শেষ দশ দিন) ইতেকাফ করতেন। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রমজানের প্রথম দশ দিন ইতেকাফ করেছিলেন। এরপর তিনি মাঝের দশ দিন একটি তুর্কি তাবুতে ইতেকাফ করলেন, যার দরজায় একটি চাটাই ছিল। একদিন রাসুল (সা.) চাটাইটি হাতে নিয়ে একপাশে সরিয়ে রাখলেন, তারপর মাথা বের করে লোকদের সাথে কথা বললেন। লোকেরা তার কাছে এগিয়ে গেলো। তিনি বললেন, আমি প্রথম দশ দিন ইতেকাফ করেছি এই রাত (লাইলাতুল কদর) অনুসন্ধানের জন্য। এরপর আমি মাঝের দশ দিন ইতেকাফ করেছি। তারপর আমাকে জানানো হয়েছে যে, এটি (লাইলাতুল কদর) শেষ দশকে রয়েছে। তাই আপনাদের মধ্যে যারা ইতেকাফ করতে চান, তারা যেন ইতেকাফ করেন। এরপর লোকেরা তার সাথে ইতেকাফ করল। (সহিহ মুসলিম)
সুতরাং রমজানে যারা সুন্নত ইতেকাফ করতে চান, তাদের রমজানের পুরো শেষ দশক ইতেকাফ করা আবশ্যক। একুশ রমজান শুরু হওয়ার আগেই তাদেরকে ইতেকাফের নিয়তে মসজিদে ঢুকে যেতে হয়। ইসলামি হিসাবে দিন যেহেতু সূর্যাস্তের পর থেকে শুরু হয়, তাই বিশ রমজানের সূর্যাস্তের আগেই তাদেরকে ইতেকাফ শুরু করতে হয়। আর তাদের ইতেকাফ শেষ হয় রমজানের শেষ দিনের সূর্যাস্তের পর।
হিজরি ক্যালেন্ডারের অন্যান্য মাসের মতো রমজানও চাঁদ দেখা যাওয়া অনুযায়ী ২৯ দিনের বা ৩০ দিনের হতে পারে। রমজানের ২৯তম দিনের সূর্যাস্তের পরই রমজান শেষ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও চাঁদ দেখা যাওয়ার আগ পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায় না রমজান শেষ হয়েছে কি না। তাই রমজানের ২৯তম দিন সূর্যাস্তের পরপরই ইতেকাফ শেষ করে মসজিদ থেকে বের হওয়া যাবে না। ঈদের চাঁদ উঠেছে নিশ্চিত হওয়ার পর ইতেকাফ শেষ করতে হবে।
আর রমজান যদি ৩০ দিনের হয়, তাহলে ৩০তম দিন সূর্যাস্তের পরপরই ইতেকাফ শেষ করে মসজিদ থেকে বের হয়ে যাওয়া যায়। ওই দিনের ইফতার বাসায় গিয়েও করা যায়। যেহেতু রমজান ওই দিনই শেষ হচ্ছে তা নিশ্চিতভাবে জানা থাকে, তাই ঈদের চাঁদ ওঠার জন্য অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন
জাতিকে এগিয়ে নিতে ঈদুল ফিতরের বার্তা ধারণের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত পরিবারের পাশে থাকবে বিএনপি : আমিনুল হক
ইমামের পাশে উপদেষ্টা আসিফের নামাজ আদায়, জানা গেল কারণ