রোমাঞ্চে ভরা ম্যাচের শেষ বলেই নির্ধারিত হতে পারত জয়-পরাজয়। কিন্তু নুরুল হাসান সোহানের হাতে ধরা পড়েননি ক্যারিবীয় ব্যাটার খেরি পেরি। তাতেই টাই হয় দ্বিতীয় ওয়ানডে। পরে সুপার ওভারে ১ রানের হৃদয়বিদারক পরাজয় বরণ করে নিতে হয় বাংলাদেশকে। ফলে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ওয়ানডে ইতিহাসে বিরল এক রেকর্ড গড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ—পুরো ৫০ ওভারই তারা বল করেছে স্পিনার দিয়ে। এমন কৌশলে বাংলাদেশকে আটকে রাখে ২১৩ রানে।
বাংলাদেশের ইনিংস
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে স্পিন-বান্ধব উইকেটে শুরু থেকেই বিপদে পড়ে টাইগাররা। ইনিংসের প্রথম ২৫ ওভারের মধ্যেই সাজঘরে ফেরেন সাইফ হাসান (৬), তাওহীদ হৃদয় (১২), নাজমুল হোসেন শান্ত (১৫) ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন (১৭)।
সৌম্য সরকার কিছুটা ভরসা জোগালেও ৮৯ বলে ৪৫ রানের ইনিংসের পর তাকেও ফেরত পাঠায় ক্যারিবীয়রা। এরপর দলের রান দুইশ পেরিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মেহেদী হাসান মিরাজ, নুরুল হাসান সোহান ও রিশাদ হোসেন।
রিশাদ খেলেন দারুণ ক্যামিও—মাত্র ১৪ বলে ৩৯ রান, যাতে ছিল তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা। সোহান করেন ২৪ বলে ২৩, আর মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৫৮ বলে ৩২ রানে।
ক্যারিবীয়দের জবাব
টার্গেট তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে দ্বিতীয় উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ১০৩ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর ১৩৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ বাংলাদেশের দখলেই ছিল।
কিন্তু এরপর শেই হোপ ও জাস্টিন গ্রেভসের ৪৪ রানের জুটি আবার ম্যাচে ফেরায় অতিথিদের। গ্রেভস রান আউট হলে (২৬) শেষ পর্যন্ত লড়াইটা চালিয়ে যান হোপ। ৬৭ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচ টাই করে ফেলেন তিনি।
শেষ ওভারে নাটক, সুপার ওভারে হতাশা
শেষ ওভারে সাইফ হাসান বল হাতে নেন। শেষ বলে ৩ রান দরকার ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। খেরি পেরির শট দৌড়ে গিয়ে লাফিয়ে ধরতে যান সোহান, কিন্তু বল গ্লাভসে না লেগে পড়ে যায় মাটিতে। টাই হয় ম্যাচ।
সুপার ওভারে বাংলাদেশ সুযোগ পেয়েছিল জয়ের, কিন্তু একাধিক মিসফিল্ড ও একবারের ক্যাচ মিসে গড়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১১ রানের লক্ষ্য। ওয়াইড ও নো বলের সুবাদে শেষ দিকে লড়াই জমলেও ১ রানে হেরে যায় বাংলাদেশ।
বোলারদের পারফরম্যান্স
বাংলাদেশের হয়ে রিশাদ হোসেন নেন ৩ উইকেট, নাসুম আহমেদ ও তানভীর ইসলাম নেন ২টি করে, আর সাইফ হাসান নেন ১ উইকেট। মিরাজ ১০ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য থাকেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে গুড়াকেশ মোতি শিকার করেন ৩ উইকেট, আকিল হোসেন ও আলিস আথানজে নেন ২টি করে।
চূড়ান্ত ওভারের সেই ক্যাচটি যদি সোহান ধরে ফেলতেন, সিরিজ জয়ের আনন্দে মাততে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় জয় ছিনিয়ে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আর মিরপুরে উৎসব স্থগিত থাকল তৃতীয় ওয়ানডের অপেক্ষায়।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
ওয়ানডের ৫৫ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার পুরো ইনিংস বল করলেন শুধুমাত্র স্পিনাররা
আশা জাগিয়েও হৃদয় ভাঙা হার মেয়েদের
সাড়ে তিন মাস পর ম্যাচ খেলতে থাইল্যান্ডে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল