টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
অভাবের তাড়নায় ঘর ছাড়লেও ফিরে আসার কথা ছিল জীবনের জয়গাথা নিয়ে। কিন্তু ভাগ্য লিখে রেখেছিল এক ভয়াবহ পরিণতির গল্প। সৌদি আরবে মাত্র এক মাসের ব্যবধানে স্ট্রোকে মারা গেছেন টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কদিম ধল্যা গ্রামের দুই ভাই—নজরুল ইসলাম (৪৫) ও আমিনুর ইসলাম (৩৫)। এই হৃদয়বিদারক ঘটনার পর দিশেহারা হয়ে পড়েছে পরিবারটি। নেমে এসেছে নিস্তব্ধতার ছায়া পুরো এলাকায়।
নিহত নজরুল ইসলাম ছিলেন সৌদি আরবে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে। ২৮ জুলাই হঠাৎ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তার। ৫ আগস্ট দেশে ফেরার কথা ছিল তার। পরিবারকে কিছুটা স্বস্তি দিতে ছুটি নিয়ে ফিরছিলেন, কিন্তু সেই সফর আর সম্ভব হয়নি। ছোট ভাই আমিনুর ইসলাম, যিনি দেড় বছর আগে প্রায় আট লাখ টাকা ঋণ নিয়ে সৌদি পাড়ি দিয়েছিলেন, তিনি বড় ভাইয়ের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অথচ এক মাস পেরোতে না পেরোতেই তিনিও মারা যান একইভাবে—স্ট্রোকে।
দুই ছেলের পরপর মৃত্যু সহ্য করতে না পেরে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বৃদ্ধা মা। সন্তানদের মরদেহ এখনও দেশে ফেরেনি। পরিবারে চলছে নিস্তব্ধ অপেক্ষা আর কান্না।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, দুই ভাইই অত্যন্ত পরিশ্রমী ও দায়িত্বশীল ছিলেন। অভাব-অনটনের সংসারে স্বস্তি ফেরানোর আশায় তারা বিদেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের স্বপ্নভঙ্গ এখন পরিবারটিকে এক অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দিয়েছে। এখনও পরিশোধ হয়নি আমিনুর ইসলামের বিদেশযাত্রার ঋণ।
নিহতদের স্বজনরা সরকারের কাছে অনুদান ও সহায়তা চেয়েছেন। তারা বলেন, “এটা শুধু আমাদের পরিবারের নয়, এটা একটি সামাজিক ট্র্যাজেডি।”
প্রবাসী শ্রমিকদের জীবনের অনিশ্চয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। তাদের কণ্ঠে একই প্রশ্ন—
“ঘাম ঝরানো জীবনগুলো কেন এতো অল্পতেই থেমে যায়?”
আরও পড়ুন
বর্ণিল আয়োজনে বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের বরণ ও ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের অনুরোধে মানবিক দিক বিবেচনায় ইলিশ পাঠানো হয়েছে। কারো কোন চাপে নয় : কুড়িগ্রামে মৎস্য উপদেষ্টা ফরিদা আখতার
টাঙ্গাইলে যুবলীগ নেতা জনি গ্রেপ্তার