অনলাইন ডেস্ক :
বাংলা চলচ্চিত্রে দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে বলে মনে করেন একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা। নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে এমনটা জানিয়ে অভিনেত্রী লিখেছেন, একজন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু বাংলা চলচ্চিত্রের অহংকার। সর্বদা স্পষ্টবাদী, মিথ্যা বা অসত্যের সঙ্গে যিনি কখনো আপোশ করেননি। তিনি বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী সময় বাংলা চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করতে, বাংলা চলচ্চিত্র সিনেমাপ্রেমী দর্শক-জনগণের মনে সামাজিক বিনোদনের জায়গা প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে দেলোয়ার জাহান ঝন্টু এক অবিস্মরণীয় নাম। শুধু সিনেমা নয়, প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ঝন্টুর নামে- এমনটাই জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর হাত ধরে অসংখ্য সিনেমা প্রযোজক সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। মাসুদ কথাচিত্র, যমুনা ফিল্মস, আলমগীর পিকচার্স, স্টার করপোরেশনসহ আরো অসংখ্য প্রযোজনা সংস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই মহান মানুষটির গুণের কারণে, ওনার লেখা গল্প পরিচালনায় দূরদর্শিতা ও দক্ষতার কারণে। অভিনেত্রী বলেন, বাংলা চলচ্চিত্রে যেসব সুপারস্টার আজ অবধি সুপ্রতিষ্ঠিত ও দর্শকপ্রিয়, তারা সবাই দেলোয়ার জাহান ঝন্টু পরিচালিত বা ঝন্টু ভাইয়ের লেখা গল্প চিত্রনাট্যতে অবশ্যই অভিনয় করেছে। মোরশেদুল ইসলামের মন্তব্যের জের ধরে অঞ্জনা বলেন, মোরশেদুল ইসলাম হয়তো গুণী পরিচালক, সেইটা আর্ট ফিল্মের ক্ষেত্রে। কমার্শিয়াল চলচ্চিত্রে ঝন্টুর ধারেকাছে তিনি কখনোই না সেটা শতভাগ সত্যি। মোরশেদুল ইসলাম পরিচালিত কোনো চলচ্চিত্রের নাম বাংলা সিনেমাপ্রেমী দর্শক আমার মনে হয় না ভুলেও বলতে পারবে আর ঝন্টু ভাই নির্মিত অসংখ্য চলচ্চিত্র আজও জনমনে গেঁথে আছে। তিনি বলেন, আর মোরশেদুল ইসলাম ভাই প্রশ্ন তুলছেন- ঝন্টু ভাই নাকি ‘অপারেশন জ্যাকপট’ নামে যে চলচ্চিত্রটি নিয়ে এত আলোচনা ও সমালোচনা, সেটা নাকি ঝন্টু ভাই দ্বারা নির্মাণ সম্ভব না- এই সিনেমার বাজেট নাকি ২৩ কোটি টাকা। মোরশেদুল ইসলামের উদ্দেশে অঞ্জনা বলেন, সত্যিকার অর্থেই আমার হাসি পেল- আরে মোরশেদ ভাই আপনি তো সব সময় আর্ট ফিল্ম নির্মাণ করেছেন, সেখানে আপনার সম্পূর্ণ ফিল্মের বাজেটই বা কত ছিল। এখন আমি বলছি আপনি শুনুন? আমি একটু নিজের কথাই বলছি ঝন্টু ভাইয়ের সঙ্গে আমার কাজের অভিজ্ঞতা। তারপর অন্যান্যের প্রসঙ্গে যাচ্ছি। ঝন্টু ভাই পরিচালিত এবং ওনার সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মিত সিনেমার বিষয়ে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে অভিনেত্রী বলেন, ১৯৭৯ সালে নির্মিত ব্লকবাস্টার সুপার বাম্পার বর্ষসেরা অন্যতম চলচ্চিত্র ‘আলাদিন আলিবাবা জিন্দাবাদ’। অভিনয়ে ছিলাম আমি ও সোহেল রানা ভাই। রোজিনা ও ওয়াসিম ভাই। নূতন ও জাভেদ ভাই। আরো অসংখ্য নামী শিল্পী ছিল এই চলচ্চিত্রে। সেটার বাজেট ছিল সে সময় এক কোটি টাকার চেয়ে বেশি। আনুমানিক ৪০টার বেশি সেট বানানো হয়েছিল এই চলচ্চিত্রের জন্য। অপারেশন জ্যাকপট বানানো নাথিং ব্যাপার বলে মনে করেন অঞ্জনা। তিনি বলেন, সব সুপারস্টার তারকাবহুল এই মুভিটি আকাশচুম্বী ব্যবসা সফলতা লাভ করে। ১৯৭৯ সালে কোটি টাকা দিয়ে যে এত বিগ বাজেটের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারে, তার কাছে এখনকার ২৩ কোটি নাথিং ব্যাপার। আর ঝন্টু ভাই শুধু ফোক ফ্যান্টাসি বা ও পোশাকি চলচ্চিত্রে তার দক্ষতা দেখিয়েছেন তা নয়। উদাহরণ দিয়ে অঞ্জনা বলেন, সকাল-সন্ধ্যা, সবুজ সাথী, দরদী শত্রু, মহান, সুখ শান্তি, প্রেমগীত, ঝিনুক মালা, শিমুল পারুল, জজ ব্যারিস্টার, বীর সৈনিকসহ আরো অসংখ্য সামাজিক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র রয়েছে এই গুণী মহান নির্মাতার পরিচালিত এবং কাহিনি ও চিত্রনাট্যে নির্মিত। ঝন্টুর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে জানিয়ে অঞ্জনা বলেন, বাংলা চলচ্চিত্র অঙ্গনে দেলোয়ার জাহান ঝন্টুর নামটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে অনন্তকাল। তিনি একজন জাতির সূর্যসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাও। ওনার তুলনা শুধুই তিনি। অবশ্যই তার গুণের সমকক্ষ দেশীয় চলচ্চিত্রে আর কোনো বোদ্ধা কেউ নেই।
আরও পড়ুন
আবারও মুক্তি পেলো ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ ছবিটি
‘সন্দেহের ছায়ায়’ উত্তাপ ছড়ালেন জয়া
তাহসান-রোজার মধুচন্দ্রিমার ছবি-ভিডিও ভাইরাল!