জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার কাফরুলে আব্দুল আলিম নামে এক ব্যক্তিকে হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। একইসঙ্গে রাষ্ট্রদ্রোহ, জনগণের ভোট ছাড়া নির্বাচন সম্পন্ন করার মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৫ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা পৃথক দুই আবেদনের শুনানি নিয়ে তাদের গ্রেফতার দেখানোর আদেশ দেন।
পলককে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাফরুল থানার এসআই মো. শাহ আলম। জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান।
আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে শুনানির দিন সোমবার ধার্য করেন। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী।
পলকের মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনের সময় ১৯ জুলাই কাফরুলের আরমান মেইনারের গেটের সামনে গুলিবিদ্ধ হন। তার চোখে গুলি লাগে। দীর্ঘদিন চিকিৎসা শেষে গত ১ এপ্রিল তিনি মামলা দায়ের করেন।
জাহাঙ্গীর আলমের মামলার মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, গত ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উলটো ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ভোট ছাড়াই নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং মামলা, গুম, খুন ও তথ্য সংরক্ষণ সমন্বয়ক সালাহ উদ্দিন খান এ মামলার বাদী, যিনি একজন সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর মামলায় দণ্ডবিধির ১২৪ (ক)/ ৪২০/৪০৬ ধারায় অভিযোগ সংযুক্ত করার আবেদন করা হয়।
মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসি এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মামলার আসামি। পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, ওই তিন নির্বাচনে ‘গায়েবী মামলা, অপহরণ, গুম খুন ও নির্যাতনের’ ভয় দেখিয়ে, বিএনপি নেতাকর্মীদের ‘গণগ্রেফতার’ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়। সংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে থাকা সত্বেও সংবিধান লঙ্ঘন, নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন, সরকারি কর্মচারী হয়েও অবৈধভাবে ভোটে হস্তক্ষেপ, ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটের কাজ সম্পূর্ণ করা ও জনগণের ভোট না পেলেও সংসদ সদস্য হিসেবে মিথ্যাভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ঘটনার সাক্ষী সকল ভোট কেন্দ্র এলাকার ভোটাররা এবং ভোটারদের মধ্যে যারা ভোট প্রদান করতে বঞ্চিত হয়েছেন তারাসহ ভোট কেন্দ্রে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক সদস্যরা।
এছাড়া ভোট কেন্দ্রে অনেক সৎ প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশ অফিসারসহ স্থানীয় লোকজনসহ আরও অন্যান্যরা ঘটনার সাক্ষী হবে।
এছাড়া ব্যালট পেপারে যে সিল ও স্বাক্ষর রয়েছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই প্রকৃতভাবে তারা ভোট দিয়েছে কিনা সে বিষয়ে উল্লেখিত ঘটনার সঠিক রহস্য তদন্তে সত্য উদঘাটিত হবে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
অনেক প্রোগ্রাম চূড়ান্ত করার পরও বাদ দেওয়া হতো: ন্যান্সি
ব্যাপক হট্টগোলোর মাঝে আদালতে অসুস্থ তৌহিদ আফ্রিদি, পাঁচ দিনের রিমান্ড
ভোটের জন্য দেশের মানুষ উন্মুখ হয়ে আছে: ড. মঈন খান