অনলাইন ডেস্ক :
হরিদ্বারে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার আহ্বান জানানোর বিষয়টি শুনানিতে গ্রহণ করবে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। ভারতের প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বলেছেন, আমরা বিষয়টি আমলে নেবো। এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলেছে, সম্প্রতি হরিদ্বারে ‘ধর্ম সংসদ’ বসে। এর আয়োজক যাতি নরসিমহানন্দ। তার বিরুদ্ধে অতীতেও অবমাননাকর মন্তব্য করে সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগ আছে। ধর্ম সংসদ থেকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর আহ্বান জানানো হয়। এ নিয়ে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে মুসলিম সম্প্রদায় আতঙ্কিত। এ অবস্থায় পাকিস্তান আনুষ্ঠানিকভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছে ভারতের কাছে। বিষয়টি ভারতের আদালতে উঠেছে। সিনিয়র আইনজীবী ও কংগ্রেস নেতা কপিল সিবাল এ বিষয়ক একটি পিটিশন নিয়ে আদালতের কাছে জানতে চাইলে প্রধান বিচারপতি এনভি রামানা বলেন, আমরা বিষয়টিতে শুনানি করবো। গত মাসে হরিদ্বারে বিতর্কিত ওই ধর্মীয় সমাবেশ থেকে জানানো আহ্বান বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ব্যবস্থা দাবি করেন কপিল সিবাল। তিনি আদালতে বলেন, হরিদ্বারে ধর্ম সংসদে যে ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে আমরা পাবলিক ইন্টারেস্ট লিটিগেশন দাখিল করেছি। দেশের স্লোগান এখন ‘সত্যমেভ জয়তে’ থেকে পাল্টে হয়ে গেছে ‘সশস্ত্রমেভ জয়তে’। এর জবাবে প্রধান বিচারপতি জানান, এর মধ্যে কি তদন্ত করা হয়নি। জবাবে কপিল সিবাল বলেন, শুধু এফআইআর করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ১৭ থেকে ১৯ শে ডিসেম্বর হরিদ্বারে অনুষ্ঠিত হয় ধর্মীয় সম্মেলন। সেখানে সমবেত নেতারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সব বাক্য ব্যবহার করেন। এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানানোর পর উত্তরাখ- পুলিশ একটি এফআইআর করে। এতে শুধু একজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। তিনি হলেন ওয়াসিম রিজভি। তিনি সম্প্রতি ধর্মান্তরিত হয়ে জিতেন্দ্র তাইগি নাম ধারণ করেছেন। এফআইআরে অন্যদেরকে বলা হয়েছে অজ্ঞাত। পরে চারটি নাম যুক্ত করা হয়েছে। তারা হলেন সাগর সিধু মহারাজ, যাতি নরসিমহানন্দ, ধর্মদাস, পুজা শকুন পান্ডে। ওই ধর্মীয় সম্মেলনের আয়োজক যাতি নরসিমহানন্দ। ওই সম্মেলনের যে ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে তাতে প্রবোধ আনন্দ গিরিকে বলতে শোনা যায়, মিয়ানমারের মতো আমাদের পুলিশ, রাজনীতিক, সেনাবাহিনী এবং প্রতিটি হিন্দুর উচিত হলো হাতে অস্ত্র তুলে নেয়া এবং সাফারি অভিযান (জাতিনিধন) চালানো। এর কোনো বিকল্প নেই। পরে তিনি এনডিটিভিকে বলেছেন, এ বক্তব্য দেয়ার জন্য তার কোনো অনুশোচনা নেই। তার ভাষায়, যা বলেছি তার জন্য আমি লজ্জিত নই। পুলিশ দেখে ভয় পাই না। আমার বক্তব্যে অটল আছি। আরেকটি ভাইরাল ভিডিওতে পুজা শকুন পা-ে ওরফে সাধ্বী অন্নপূর্ণাকে বলতে দেখা যায় অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে মুসলিমদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালাতে আহ্বান জানাচ্ছেন। তিনি বলছেন, যদি তুমি তাদেরকে শেষ করে দিতে চাও, তবে তাদেরকে হত্যা করো। এই লড়াইয়ে জিততে তাদের ২০ লাখকে হত্যা করতে আমাদের দরকার ১০০ সেনা।
আরও পড়ুন
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে ৩৮ জনের মৃত্যু, আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় শোক পালন
বিশ্বে ক্ষুধার্ত মানুষ বাড়ছে, কমছে ধনী দেশের সাহায্য
গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন চলছেই, একদিনে নিহত ৫৮