ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি হত্যার প্রতিবাদ ও দ্রুত বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগে শিক্ষার্থী ও সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমেছে। শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর থেকেই শাহবাগ এলাকায় জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে এবং দুপুরের দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ রূপ নেয় গণজমায়েতে।
বিক্ষোভের মধ্যেই শাহবাগ মোড়ে জুমার নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ের নাম পরিবর্তন করে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ ঘোষণা করেন। চলমান আন্দোলনের কারণে শাহবাগ মোড়ে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি (ভিপি) সাদিক কায়েমের ঘোষণায় শাহবাগে শুরু হয় আধিপত্যবাদবিরোধী সমাবেশ। মৎস্য ভবনমুখী সড়কে ডাকসু সদস্যরা একটি ট্রাকের ওপর অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন প্রতিবাদী স্লোগান দেন। একই সময়ে জুলাই ভাস্কর্যের পাদদেশে জুলাই আন্দোলনে অংশ নেওয়া বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের সদস্যদেরও অবস্থান নিতে দেখা যায়।
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের স্লোগানের মধ্যে ছিল— ‘আর নয় প্রতিরোধ, এবার হবে প্রতিশোধ’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি ঘরে ঘরে’, ‘এক হাদি লোকান্তরে, লক্ষ হাদি লড়াই করে’।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ অংশ নেন। বক্তারা হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত করার পাশাপাশি ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের আহ্বান জানান।

বিক্ষোভকারীদের দাবির মধ্যে রয়েছে— হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ। আন্দোলনকারীরা ঘোষণা দেন, ওসমান হাদির মরদেহ ঢাকায় পৌঁছানো পর্যন্ত তারা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
সমাবেশে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, “আমরা আমাদের ভাই হাদি হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বো না। আমাদের এ অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে।” তিনি হাদির হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেন।

ডাকসু নেতা এবি জুবায়ের বলেন, শহীদ শরিফ ওসমান হাদি কোনো সহিংসতার পথে বিশ্বাসী ছিলেন না। মেধা, মনন ও জ্ঞানের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তোলাই ছিল তার আদর্শ। তিনি আন্দোলনের নামে কোনো উসকানি বা সহিংসতায় না জড়িয়ে শান্তিপূর্ণ ও সংগঠিতভাবে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
এর আগে জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে শহীদ হাদির রুহের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এসে সমাবেশে যোগ দেন।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
দেশের পথে ওসমান হাদির মরদেহ, নেওয়া হবে ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদে
শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশে আসবে ওসমান হাদির মরদেহ
অস্ত্রোপচার শেষে মারা যান ওসমান হাদি: ডা. আহাদ