জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি তাঁকে সরকারপ্রধান হওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (দ্বিতীয় দিনের মতো) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে তিনি এ জবানবন্দি দেন। সকাল সোয়া ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত বিচারপতি গোলাম মোর্তজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের বেঞ্চ তার সাক্ষ্য রেকর্ড করেন।
এর আগে, গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিকেল ৩টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত তার জবানবন্দি গ্রহণ করা হলেও শেষ না হওয়ায় আজ পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছিল।
নাহিদ ইসলাম জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট সংবাদ সম্মেলন করে রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার গঠনের দাবি তোলা হয়। এ সময় তিনি স্পষ্ট করে বলেন, কোনোভাবেই সেনাশাসন বা সেনা-সমর্থিত শাসন তারা মেনে নেবেন না।
তিনি আরও বলেন, পুরো আন্দোলন চলাকালে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এমনকি হেলিকপ্টার থেকেও গুলি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালায় এবং নির্যাতন চালায়।
এনসিপি আহ্বায়ক অভিযোগ করেন, এসব হত্যাকাণ্ড ও নৃশংস ঘটনার জন্য দায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তৎকালীন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা। তার দাবি, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই এসব হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়— যাতে তারা ক্ষমতাকে আরও পাকাপোক্ত ও নিরঙ্কুশ করতে পারে।
নাহিদ আরও বলেন, পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানা যায়, আন্দোলনকারীদের ওপর হেলিকপ্টার ও নেথাল ওয়েপন ব্যবহারের নির্দেশও দিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এজন্য তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করেন— এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত অপরাধীদের যেন কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।
জবানবন্দির একপর্যায়ে তিনি উল্লেখ করেন, পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গত বছরের ৪ আগস্ট শাহবাগে অবস্থান ও বিক্ষোভ করা হয় এবং সেদিনই ৬ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সরকার কারফিউ জারি করে দেশব্যাপী হত্যাযজ্ঞ চালায়। পরে জানা যায়, ওই কর্মসূচি বানচাল করার জন্য সরকার ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়, এমনকি মোবাইল ও ইন্টারনেট বন্ধের পরিকল্পনাও ছিল। হত্যার আশঙ্কায় কর্মসূচি একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট নির্ধারণ করা হয়।
তিনি বলেন, ৫ আগস্ট ‘মার্চ টু ঢাকা’ সফল করতে এনসিপির সমন্বয়ক মাহফুজ আলম অন্যান্য ছাত্র সংগঠন ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে লিঁয়াজো করেন। আর নতুন সরকার গঠনের অংশ হিসেবে তখনই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁকে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানীর ছোট ভাই বিজিবিতে চাকরি পেলেন
অমর একুশে বইমেলা শুরু এ বছরের ১৭ ডিসেম্বর
শুক্রবার ৮ ঘণ্টা গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে যেসব এলাকায়