অনলাইন ডেস্ক
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা আরেকটু সময় পেলেই বাংলাদেশকে ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলতো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রবিনাশী দল আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে ভারত এ দেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল। শেখ হাসিনার মাধ্যমে তারা তিন-তিনটি নির্বাচন করে প্রমাণ করেছিল বাংলাদেশে কোনো নির্বাচন ব্যবস্থা নেই।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেই মূলত সব অর্থে বাংলাদেশকে ভারতের ক্রীতদাসে পরিণত করেছিল। আরেকটু সময় পেলে ফ্যাসিস্ট হাসিনা লেন্দুপ দর্জির মতো বাংলাদেশটাকেও ভারতের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলতো।
শনিবার (১৯ এপ্র্রিল) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ভারতে মুসলিম নির্যাতন ও হত্যার প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ভারত সম্প্রতি নিজেদের সারা বিশ্বে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরেছে। এটি এতটাই নির্মম রাষ্ট্র, শুধু যে মুসলমানদের হত্যা করছে তা নয়, সে দেশে নিম্নবর্ণের হিন্দু এবং জাতি-প্রজাতির মানুষকে তারা হত্যা করছে, নির্যাতন করছে। গাজায় ইসরায়েল এ পর্যন্ত নারী-শিশুসহ ৫০ হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করেছে। মনে রাখতে হবে এই ভারত কিন্তু দখলদার ইসরায়েলের বন্ধুরাষ্ট্র।
বিএনপির এ ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছিল। তারা জায়গা দিয়েছিল, আশ্রয় দিয়েছিল। সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। এজন্য আমরা ভারতকে বন্ধুরাষ্ট্র মনে করি। কিন্তু ভারত কি বাংলাদেশকে বন্ধুরাষ্ট্র মনে করে? না, তারা মোটেও সেটা মনে করে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিশ্চিহ্ন করার পাঁয়তারা করা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শেখ হাসিনাকে তারা (ভারত) জায়গা দিয়েছে। এরপর ভারত নিজেদের আর কোনো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এটা দাবি করতে পারে না। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে জায়গা দিয়ে নিজেরাও যে ফ্যাসিস্ট সেটা ভারত প্রমাণ করেছে।
‘আমরা ফ্যাসিস্টকে রুখে দিয়েছি, আমাদের দেশ থেকে তাকে তাড়িয়ে দিয়েছি; এখানে তাদের জায়গা হয়নি। বলা হচ্ছে, জীবন বাঁচানোর জন্য হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছে। আসলে জীবন বাঁচানোর জন্য না। তার আসল ঠিকানাই হচ্ছে ভারত। একজন ফ্যাসিস্ট কেবল আরেকজন ফ্যাসিস্টের সঙ্গে থাকতে পারে। কারণ আমরা তো এরশাদকেও পরাজিত করেছিলাম। গণঅভ্যুত্থানে তাকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। তিনি জেলখানায় গিয়েছিলেন। হাসিনার মতো ভারতে পালিয়ে যাননি।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, হাসিনার মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে কব্জায় রাখতে পারেনি। তাই বলে আগামী দিনে পারবে না, সেটা ভাবার অবকাশ নেই। নানান ষড়যন্ত্র হচ্ছে। বাংলাদেশকে কব্জায় রাখতে তারা ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আহ্বান জানাবো, যত দ্রুত সম্ভব আপনাদের প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে এ দেশে একটি রাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন।
নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের কথাটা বিএনপি বারবার আপনাদের কাছে বলে আসছে। তা না হলে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ রাখা কঠিন হবে। জনগণ ঐক্যবদ্ধ না থাকলে ভারতের জন্যই সুবিধা হবে। সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করার জন্য জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন মো. ফারুক রহমান প্রমুখ।
আরও পড়ুন
ইনস্টাগ্রাম স্টোরি হোয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করা যাবে
শিল্পীদের উৎসবমুখর নির্বাচনে বিরতি পর্যন্ত ভোট পড়েছে ২২০টি
হজের জন্য জমানো টাকা অন্য কাজে খরচ করলে গুনাহ হবে?